আজকের আলোচনার বিষয়ঃ ফুটবলের অসদাচরণ ও দুর্ব্যবহার,ফুটবল খেলার দ্বাদশ আইন
ফুটবলের অসদাচরণ ও দুর্ব্যবহার । ফুটবল খেলার দ্বাদশ আইন । খেলাধুলার আইন
খেলার সময় ফুটবলের আইন লংঘনকারী ও খেলার সৌন্দর্য এবং মান নষ্টকারী খেলোয়াড়ের যে কোন আচরণ ও ব্যবহারকে অসদাচরণ ও দুর্ব্যবহার বলে ।
বিপক্ষীয় খেলোয়াড়ের প্রতি নিম্নবর্ণিত ৯টি ইচ্ছাকৃত আচরণ দুর্ব্যবহারকে খেলোয়াড়ের অসদাচরণ ও দুর্ব্যবহার ধরা হয়। অসদাচরণ ও দুর্ব্যবহারের শাস্তি হিসেবে অকুস্থল থেকে ডিরেক্ট ফি- কিক হয় । পেনাল্টি এলাকায় ঘটলে পেনাল্টি কিক হয়।
(ক) বিপক্ষীয় খেলোয়াড়কে ইচ্ছাকৃত লাথি মারা বা লাথি মারার চেষ্টা করা ।
(খ) বিপক্ষীয় খেলোয়াড়ের গায়ের উপর লাফিয়ে পড়া।
(গ) বিপক্ষীয় খেলোয়াড়কে ল্যাং মেরে ফেলে দেয়া বা দেয়ার চেষ্টা করা
(ঘ) বিপক্ষীয় খেলোয়াড় বাধার সৃষ্টি না করা সত্ত্বেও তাকে পেছন থেকে আক্রমণ করা।
(ঙ) বিপক্ষীয় খেলোয়াড়কে কোনরকম আঘাত করা বা করার চেষ্টা করা ও থুথু দেয়া।
(চ) বিপক্ষীয় খেলোয়াড়কে হাত বা হাতের যে কোন অংশ দিয়ে ধরে রাখা বা আঁটকানো।
(চ)বিপক্ষীয় খেলোয়াড়কে মারাত্মকভাবে আক্রমণ করে আহত করার চেষ্ট করা।
(ছ) বিপক্ষীয় খেলোয়াড়কে হাত বা হাতের যে কোন অংশ দিয়ে ধাক্কা দেয়া হ দেয়ার চেষ্টা করা।
(জ) হাত দিয়ে বল ধরা, বহন করা, মারা বা বল ঘুরিয়ে দেয়া, (নিজ এলাকায় অবস্থানরত গোলকিপারের বেলায় প্রযোজ্য নয় তবে পেনাল্টি এরিয়ার বাইরে গোলকিপারের জন্যও প্রযোজ্য)।
নিম্নে বর্ণিত ৫টি কার্যাদি অপরাধ হিসেবে ধরা হয়। অপরাধের শান্তি অকুস্থল থেকে ইনডিরেক্ট ফ্রি কিক হয় :
(ক) বিপক্ষীয় গোলকিপারের ধরে থাকা বলে কিক মারা বা মারার চেষ্টা করা।
(খ) বল খেলার দূরত্বের বাইরে থাকা সত্ত্বেও বিপক্ষীয় খেলোয়াড়কে অনর্থক চার্জ করা।
(গ) বল না খেলে বিপক্ষীয় খেলোয়াড়কে অনর্থক ধাক্কা দেয়া, চার্জ করা বা করার চেষ্টা করা ।
(ঘ) বিপক্ষীয় গোলকিপার বল ধরে থাকলে, বিপক্ষীয় গোলকিপারকে বল ধরতে বাধা দিলে এবং অন্যান্য সময় গোলকিপারকে আক্রমণ করা।
(ঙ) গোলকিপার বল হাত দিয়ে ধরা অবস্থায় চার পদক্ষেপের মধ্যে বল মেরে দিতে হবে ।
- খেলা চলাকালীন অবস্থায় গোলকিপার বল মাটিতে ছেড়ে আবার হাতে ধরতে পারবে না। হাতে ধরলে ইনডিরেক্ট ফ্রি-কিক হবে।
- খেলা চলাকালে খেলোয়াড়ের অসদাচরণ বা অখেলোয়াড়োচিত ব্যবহারের জন্য অপরাধী খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী রেফারি যে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
- রেফারির বিবেচনায় কোন খেলোয়াড়ের অসদাচরণ বা অখেলোয়াড়োচিত আচরণের গুরুত্বের উপর ভিত্তি করে, অপরাধী খেলোয়াড়কে মৌখিক বা হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করে দিতে পারেন ।
- একই খেলায় হলুদ কার্ডপ্রাপ্ত খেলোয়াড় যদি দ্বিতীয়বার হলুদ কার্ড পায় ত তা লাল কার্ড হবে।
- অবধারিত গোলের সময় যদি কোন খেলোয়াড় নিজ দলের গোল রক্ষার্থে ইচ্ছেকৃত ফাউল করেন বা হাত দিয়ে ধরে অবধারিত গোলটি বাচাতে চেষ্টা করেন তাহলে রেফারি উক্ত দলের বিরুদ্ধে পেনাল্টি এরিয়ার মধ্যে হলে পেনাল্টি দেবেন।
- বাইরে হলে ফ্রি-কিক দেবেন, এবং উক্ত অপরাধী খেলোয়াড়কে সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বহিষ্কার করবেন।
- গোলকিপার অবধারিত গোল বাঁচানোর জন্যে যদি পেনাল্টি এরিয়ার বাইরে গিয়ে ইচ্ছেকৃত বল হাত দিয়ে ধরে বা পাঞ্চ করে অথবা ফাউল করে তাহলে রেফারি উক্ত দলের বিরুদ্ধে ঐ স্থান ফ্রি-কিক দেবেন এবং গোলকিপারকে লাল কার্ড দেখাবেন।
- গোলকিপার তার স্বদলের খেলোয়াড় এর ইচ্ছাকৃতভাবে পা দিয়ে পাস করা বল অর্থাৎ ব্যাকপাশ হাত দিয়ে ধরতে পারবে না, যদি ধরে তবে তার দলের বিরুদ্ধে ইনডিরেক্ট ফ্রি-কিক হবে। মাথা, বুক, হাঁটু দিয়ে বা থ্রো করা বল ধরতে পারে।
- বিপক্ষ দলের আক্রমণের সময় নিজ পক্ষের খেলোয়াড়ের গায়ে, পায়ে বা মাথায় লেগে বল গোলপোস্টে যায় বা গোল হবার উপক্রম হয়, তখন গোলকিপার সে বল পাঞ্চ করতে পারেন বা বলটি ধরে কোন স্টেপ বা ড্রপ না দিয়ে তৎক্ষণাৎ তড়িৎগতিতে বল মেরে দিতে পারেন।
- গোল লাইনের কাছে বা উপর এবং গোল এরিয়ার মধ্যে রেফারি কোন অপরাধের জন্য বল ড্রপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে, গোল লাইনের সমান্তরাল এবং সামনে গোল এরিয়া লাইনের উপর রেফারি বলকে ড্রপ দেবেন।
- খেলা চলাকালীন সময়ে যে কোন খেলোয়াড়ের অসদাচরণ-এর গুরুত্বানুযায়ী রেফারি সতর্কীকরণ, হলুদ কার্ড এবং লাল কার্ড দেখাতে পারেন।
আরও দেখুনঃ