আইপিএলে বিভিন্ন সময়ে টাইগারদের অংশগ্রহণ [ Participation of Tigers in IPL at different times ] !
২০০৮ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ভারতের ঘরোয়া টি টোয়েন্টি ক্রিকেট [ t twenty cricket ] এর সর্বোচ্চ আসর, আইপিএল । এই আইপিএলকেই বিশ্বের ১ নম্বর টি টোয়েন্টি লিগ বলা হয়ে থাকে। মূলত, ২০০৮ সাল থেকে শুরু হওয়া আইপিএলের পর থেকেই পরিবর্তন হওয়া শুরু করে ,বিশ্ব ক্রিকেটের গতিপথ। এ আইপিএলের কারণেই বিশ্ব ক্রিকেটে ধীরে ধীরে বেড়ে চলে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দ্বৈরথ। বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের তকমা পাওয়া এ আইপিএলে খেলতে বিশ্বের সফলতম ক্রিকেটারেরা মুখিয়ে থাকেন।
Table of Contents
[ আইপিএলে বিভিন্ন সময়ে টাইগারদের অংশগ্রহণ ]
এখন পর্যন্ত , অনুষ্ঠিত হওয়া আইপিএলের ১৪টি আসরের মধ্যে বাংলাদেশিদের মধ্যে মোট ৬ জন দল পেয়েছেন। তার মধ্যে সাকিব আল হাসান এবং মোস্তাফিজুর রহমান ছাড়া কেউই একাধিক ম্যাচ খেলতে পারেননি।
আব্দুর রাজ্জাক :
বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বপ্রথম আইপিএলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। আইপিএলের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে খেলেছিলেন তিনি। তবে, আইপিএলের সেবারের আসরে, আরসিবির হয়ে মাত্র একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিলো রাজ্জাকের। আর তা ছিলো, সেবারের আসরের চ্যাম্পিয়ন রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে।
সে ম্যাচে, আব্দুর রাজ্জাক ২ ওভার বোলিং করে ১৪.৫০ ইকোনোমি রেটে কোনো উইকেট না নিয়ে খরচ করেছিলেন ২৯ রান। এরপরে, অবশ্য আইপিএলের আর কোনো আসরেই আব্দুর রাজ্জাককে দেখা যায়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫৩ ওয়ানডেতে ২৯.২৯ গড়ে ২০৭ উইকেট নিয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক।
এছাড়াও, আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৯.০৪ গড়ে ৪৪ টি উইকেট নিয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক। ২০১৮ সালে, বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন আব্দুর রাজ্জাক।
মোহাম্মদ আশরাফুল :
বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম পোস্টারবয় , মোহাম্মদ আশরাফুল আইপিএল খেলেছেন ২০০৯ সালে। সেবার, শচীন টেন্ডুলকারের অধীনে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে খেলেন আশরাফুল। মোহাম্মদ আশরাফুল, আইপিএলে তার ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে ব্যাট হাতে মাত্র ১টি ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পান। তবে, সে ম্যাচে উল্লখযোগ্য তেমন কিছুই করতে পারেননি তিনি। সে ম্যাচে, আশরাফুল ১০ বলে মাত্র ২ রান করেন ।
দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে সে ম্যাচটি ছিলো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বাচা মরার লড়াই। সে ম্যাচটি জিতলেই সেমিফাইনাল খেলার টিকিট নিশ্চিত হতো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম জয়ের নায়ক ছিলেন আশরাফুল।
২০০৭ থেকে ২০০৯ সালে, বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল।
মাশরাফি বিন মোর্তজা :
ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তজাও আইপিএল খেলেন ২০০৯ সালে। সেবার, সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বাধীন কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলেন তিনি। তৎকালীন, আইপিলের দল ডেকান চার্জার্সের বিপক্ষে খেলেছিলেন মাশরাফি বিন মোর্তজা।
সেবারের আসরের চ্যাম্পিয়ন দল ছিলো ডেকান চার্জার্স। ডেকান চার্জার্সের বিপক্ষে সে ম্যাচে, কোনো উইকেট না নিয়ে ৪ ওভারে ৫৮ রান খরচ করেন মাশরাফি বিন মোর্তজা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে ৩৯০ টি উইকেট নিয়েছেন, মাশরাফি বিন মোর্তজা। মাশরাফিকে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক বলা হয়।
মোস্তাফিজুর রহমান :
কাটার মাস্টার ‘দ্য ফিজ’ এখন পর্যন্ত আইপিএলে অংশগ্রহণ করেছেন মোট চার বার। ২০১৬ সালে ডেভিড ওয়ার্নার নেতৃত্বাধীন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে আইপিএলে অভিষেক হয় তার। সেবারের আসরের শিরোপা জিতেছিলো মোস্তাফিজের দল হায়দ্রাবাদ এবং সে শিরোপা জিততে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেছিলেন মোস্তাফিজ।
২০১৭ সালের আইপিএলেও, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলার সুযোগ হয় তার। তবে, ইঞ্জুরি ফেরত মোস্তাফিজ সেবারের আসরে তার প্রথম ম্যাচে তেমন কিছু করতে না পারায় আর দ্বিতীয়বার হায়দ্রাবাদের হয়ে মাঠে নামা হয়নি মোস্তাফিজের। ২০১৮ মৌসুমে, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আইপিএল খেলেন মোস্তাফিজ। তবে, সে মৌসুমে দলের একাদশে অনিয়মিত ছিলেন মোস্তাফিজ।
এরপর আবারো, ২০২১ আইপিএলে, রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে আইপিএল মাতান মোস্তাফিজ। সেবার অবশ্য দলের নিয়মিত মুখ ছিলেন মোস্তাফিজ তবে, দলের ব্যাটারদের ব্যার্থতায় তার দল রাজস্থান প্লে অফে কোয়ালিফাই করতে পারেনি।
সাকিব আল হাসান :
বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা ক্রিকেটার হলেন সাকিব আল হাসান। ২০১১ সালে , কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএলে অভিষেক হয় সাকিবের। সেবার, তার দল কলকাতা প্লে অফে কোয়ালিফাই করতে পারলেও ফাইনালে উঠতে পারেনি।
তবে, ২০১২ সালে তার দল কলকাতা নাইট রাইডার্স প্রথমবারের আইপিএলের শিরোপা অর্জন করে। সে মৌসুমের কলকাতা দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন সদস্য ছিলেন সাকিব। এরপর, ২০১৪ সালে পুনরায় কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে শিরোপা জেতেন সাকিব। ২০১৫ , ২০১৬ এবং ২০১৭ সালেও আইপিলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলেন ।
তবে, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলেন সাকিব আল হাসান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞার কারণে, ২০২০ আইপিএলে সাকিব অংশ নিতে না পারলেও ২০২১ আইপিএলে পুনরায় কলকাতা নাইট রাইডার্সের অংশগ্রহণ করেন সাকিব। এখন পর্যন্ত , আইপিএলে ৭১ ম্যাচে ১৮৩৯ রান এবং ৬৩ টি উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান।
আরও পড়ুন:
ব্রেন্ডন টেইলর [ Brendan Taylor ] বর্ণাঢ্য ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারে এক প্রশ্নবাচক চিহ্ন