আয়ারল্যান্ড দলে আফ্রিদিসহ ১০ টেস্ট ক্রিকেটার: আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটার বয়েড র্যাংকিং, ইয়ন মরগান কিংবা এড জয়েসের নাম আমরা অনেকেই শুনেছি। এদের প্রত্যেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আয়ারল্যান্ডের পাশাপাশি ইংল্যান্ডকে প্রতিনিধিত্ব করেছে। কিন্তু, এমন অনেক ক্রিকেটারই আছেন যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের জন্মভূমির পাশাপাশি আয়ারল্যান্ড দলেও খেলেছেন।
ভিনদেশী ক্রিকেটার হয়েও আয়ারল্যান্ডের হয়ে ক্রিকেট খেলার ধারা শুরু করেন সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটার, হ্যানসি ক্রোনিয়ে। তিনি বেনসন এন্ড হেজেস কাপে আইরিশদের হয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ক্রোনিয়ে সেবার আয়ারল্যান্ডের হয়ে অনেকটা অবাকই করেছিলেন ক্রিকেট বিশ্বকে যা আয়ারল্যান্ডকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরিণত করার প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে পরিণত হয়েছিল।
হ্যানসি ক্রোনিয়ে
[ আয়ারল্যান্ড দলে আফ্রিদিসহ ১০ টেস্ট ক্রিকেটার ]
ক্রোনিয়ে ৩টি ম্যাচ খেলে ২টি অর্ধশতক করেছিলেনএবং ৬টি উইকেটও নিয়েছিলেন। আয়ারল্যান্ড ক্রনিয়ের অপরাজিত রানের জন্য একটি ম্যাচ জিতেছিল এবং এটি ইতোমধ্যেই একটি সফল পরীক্ষা ছিল।
২০০৬ সাল, পাকিস্তানিদের আইরিশদের সাথে যোগ দেওয়ার পালা। বুম বুম আফ্রিদি আয়ারল্যান্ডের হয়ে সিএন্ডজি ট্রফিতে মোট ৬টি ম্যাচ খেলেন এবং ১২৮ রান করেন। তবে, হতাশাজনকভাবে শুধুমাত্র একটি ম্যাচে তিনি ৫০ পেরোতে পেরেছিলেন।
শহীদ আফ্রিদি
তিনি ১৪৮ রানে মাত্র ৭ উইকেট নিয়ে সুস্পষ্টভাবে একটি সাদামটা বোলিংয়ের প্রদর্শন দেখাতে পেরেছিলেন। কিন্তু তিনি আয়ারল্যান্ডের হয়ে এক ম্যাচে গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে আট ওভারে মাত্র ৩ রান ৪ উইকেট নিয়ে এক দুর্দান্ত বোলিংয়ের প্রদর্শন করেছিলেন এবং সেটি ছিলো আয়ারল্যান্ডের সে মৌসুমে একমাত্র জয়।
২০০৬ সালে, আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলতে সেবার তাদের দলে যোগ দিয়েছিলেন পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তী স্পিনার সাকলাইন মুশতাক। তবে, সেবার সি এন্ড জি ট্রফিতে মাত্র ৪ উইকেট নিয়েছিলেন সাকলাইন।
সাকলাইন মুশতাক
দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কের পরই অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ককে নিজ দলে পেতে সক্ষম হওয়া আয়ারল্যান্ড ক্রিকেটের জন্য একটি বড় সৌভাগ্যের বিষয় ছিল। অস্ট্রেলিয়া “এ” দলের বিরুদ্ধে একটি সিরিজে অজি অধিনায়ক আসলে আইরিশদের হয়ে অতিথি খেলোয়াড় হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিলেন, যেখানে অনেক খেলোয়াড় ছিল যারা বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার জন্য মুখিয়ে ছিলো। স্টিভ ওয়াহ সে সিরিজে দুটি হাফ সেঞ্চুরি এবং ৩৫.১৪ গড়ে ২৪৬ রান করেন যা আয়ারল্যান্ডে ক্রিকেট খেলার প্রচারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলো।
হ্যান্সি ক্রনিয়ে এবং স্টিভ ওয়াহের উদাহরণ অনুসরণ করে আয়ারল্যান্ডের হয়ে অতিথি হিসেবে খেলার সারিতে তৃতীয় ছিলেন জন্টি। জন্টি আইরিশদের হয়ে দুটি ৩ দিনের ম্যাচ এবং চারটি সীমিত ওভারের ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকান একাডেমি দলের বিপক্ষে খেলেছিলেন যেখানে আন্দ্রে নেল, আহমেদ আমলা, গুলাম বদির মতো ক্রিকেটারেরা ছিলেন।
সীমিত ওভারের ম্যাচের সিরিজটি ২-২ এ টাই হয়েছিল, কিন্তু রোডস চার ইনিংসে মাত্র ৪২ রান করতে সমর্থ হয়েছিলেন। তিনি ৩ দিনের ম্যাচগুলোতে আরও ভালো পারফর্ম করেছিলেন কারণ তিনি দুটি হাফ সেঞ্চুরি সহ মোট ১৯৯ রান করেছিলেন এবং চারটি ক্যাচ নিয়েছিলেন। যদিও পরিসংখ্যান এটি দেখায় না, তবো আপনি বাজি ধরতে পারেন যে তিনি কিছু দুর্দান্ত ফিল্ডিং দিয়ে দর্শকদের মন ভরিয়েছিলেন।
জোহান বোথা ২০০৫ সালে সিএন্ডজি ট্রফিতে আয়ারল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটের জার্নিম্যান আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলতে গিয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাত্র ১টি ম্যাচ খেলেন এবং সে ম্যাচে ব্যাট ও বলের মাধ্যমে অত্যন্ত সাদামটা পারফর্মেন্স দেখান। সে ম্যাচে তিনি ব্যাট হাতে ১৮ রান করেন এবং বল হাতে ৩৭ রান খরচ করে কোন উইকেট পাননি।
২০০৮ সালের ফ্রেন্ডস প্রভিডেন্ট ট্রফিতে (পুরনো সিএন্ডজি ট্রফি) আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলেন উইন্ডিজ পেসার রবি রামপল। তবে, সে টুর্নামেন্টে আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলে নিজের সুনামের কোনো ক্ষতি করেননি। তিনি আয়ারল্যান্ডের পক্ষে ৫ এর নিচে ইকোনমি রেটে ১০ উইকেট নিয়ে সে টুর্নামেন্টে আয়ারল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন। তার বোলিং নৈপুণ্য আয়ারল্যান্ডকে দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ট্রফিতে একটি খেলা জিততে সাহায্য করার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিল।
জিম্বাবুয়ের এক সময়ের তারকা অলরাউন্ডার নিল জনসন বেনসন এন্ড হেজেস কাপে আয়ারল্যান্ডের হয়ে ৩টি ম্যাচ খেলেছেন। এ ৩ ম্যাচের একটিতে তিনি ব্যাট হাতে একটি ফিফটি হাকিয়েছিলেন। তিনি বল হাতে মাত্র দুটি উইকেট তুলে নিয়েও লড়াই করেছিলেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে বেশকিছু স্মরণীয় ম্যাচে তার অলরাউন্ড নৈপুণ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
আয়ারল্যান্ডের হয়ে ২০০৭ সালে খেলেছিলেন সাবেক প্রোটিয়া পেসার ন্যানটি হেইওয়ার্ড। ২০০৭ সালে, আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলে ৭ উইকেট লাভ করেন তিনি।
জেসি রাইডার
আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন কিউই ব্যাটার জেসি রাইডারও। তবে, আয়ারল্যান্ডের জার্সি গায়ে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। ৩ ম্যাচে করেছেন মাত্র ২ রান।