ওয়েলসের ৬৪ বছর পর বিশ্বকাপে পদার্পণ: ৬৪ বছর ফুটবল বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেলো ওয়েলস ফুটবল দল। সর্বশেষ ১৯৫৮ সালে ফুটবল বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছিল ওয়েলস। এরপর, ৬৪ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে বিশ্বকাপে খেলার সৌভাগ্য অর্জন করলো ওয়েলস। এ যেনো ওয়েলস ফুটবলে স্বর্ণালি এক সময়।
স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপ খেলার আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল ইউক্রেন। কিন্তু সেটি শেষ হয়ে গেলো অধিনায়ক আন্দ্রে ইয়ারমোলেঙ্কোর আত্মঘাতী গোলে। ওয়েলসের বিপক্ষে পুরো ম্যাচে দাপট দেখালেও, আত্মঘাতী গোলে হেরে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো ইউক্রেনের।
মুদ্রার উল্টো পিঠে ঠিক যেখানে শেষ হয়েছে ইউক্রেনের স্বপ্ন, সেখান থেকেই নতুন সুর্যোদয় হলো গ্যারেথ বেলের দেশ ওয়েলসের। ইয়ারমোলেঙ্কোর আত্মঘাতী গোলে পাওয়া জয়ে ৬৪ বছর পর বিশ্বকাপের মূল পর্বে উঠেছে ওয়েলস। কাতার বিশ্বকাপে বি গ্রুপে লড়বে তারা।

১৯৫৮ সালের সুইডেন বিশ্বকাপে প্রথম ও শেষবারের মতো খেলেছিল ওয়েলস। সেই আসরের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনালে থেমেছিল তাদের যাত্রা। মাঝের ৬৪ বছর অনেক চেষ্টার পরও বিশ্বকাপের মূল পর্বে উঠতে পারেনি ইংল্যান্ডের প্রতিবেশি দেশটি।
[ ওয়েলসের ৬৪ বছর পর বিশ্বকাপে পদার্পণ ]
অবশেষে দীর্ঘ ৬৪ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে দেখা যাবে গ্যারেথ বেল, অ্যারন রামসিদের। রোববার রাতে কার্ডিফ সিটি স্টেডিয়ামে হওয়া বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ার ফাইনাল ম্যাচটিতে ১-০ গোলে জিতেছে ওয়েলস। সেটিও তারা পেয়েছে প্রতিপক্ষের কাছে উপহার হিসেবে।
ইউক্রেনকে হারিয়ে ওয়েলসের বিশ্বকাপ টিকিট পাওয়ার পেছনে বড় কৃতিত্ব পাবেন গোলরক্ষক ওয়েন হেনেসি। পুরো ম্যাচে একের পর এক আক্রমণ করে গেছে ইউক্রেন, একবারের জন্যও টলেননি হেনেসি। ম্যাচে ৬৮ শতাংশ সময় বল নিয়ন্ত্রণে রেখে লক্ষ্য বরাবর ৯টি শট করেছিল ইউক্রেন, গোল পায়নি একটিও।

অবশ্য গোল পায়নি বললে পুরোপুরি ঠিক হবে না। কেননা ম্যাচের তিন মিনিটের মাথায়ই ওয়েলসের জালে বল ঢুকিয়েছিলেন ওলেকজান্ডার জিনচেঙ্কো। কিন্তু প্রতিপক্ষ দলের সবাই তখন অপ্রস্তুত থাকায় রেফারি সেটিকে গোল হিসেবে বিবেচনা করেননি। বরং অতি দ্রুত ফ্রি-কিক নেওয়ায় সতর্ক করা হয় জিনচেঙ্কোকে।
২০১৬ সালে দুই দলের মধ্যকার ফিফা প্রীতি ম্যাচের ফলও ছিল ১-০, তবে সেদিন জয়ী দলের নাম ছিল ইউক্রেন আর জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেছিলেন ইয়ারমোলেঙ্কো। সেই ইয়ারমোলেঙ্কো আজও গোল করেছেন, তবে নিজেদের জালে, যা ওয়েলসকে পাইয়ে দিয়েছে জয়।
ম্যাচের ৩৪ মিনিটের সময় ফ্রি-কিক পায় ওয়েলস। অধিনায়ক বেল নিজেই আসেন শট নিতে। বেলের জোরালো শট অন্যপ্রান্তে থাকা ইউক্রেন অধিনায়ক ইয়ারমোলেঙ্কো ক্লিয়ার করতে গিয়ে উল্টো হেডের মাধ্যমে নিজেদের জালেই প্রবেশ করান। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে মাতে ওয়েলস শিবির।

ইউক্রেনের ভাগ্য নির্ধারণ করতে ইয়ারমোলেঙ্কোর এই এক ভুল হেডই যথেষ্ট ছিল। ম্যাচের ৪০ মিনিটের সময় অবশ্য আশা জেগেছিল গোলের। ইয়ারমোলেঙ্কোকে ফাউল করেছিলেন জো অ্যালেন। সম্ভাব্য পেনাল্টির জন্য ভিএআর চেক করা হয়। কিন্তু বাঁশি বাজেনি ইউক্রেনের পক্ষে।
দ্বিতীয়ার্ধেও গোলের জন্য মরিয়া ছিল ইউক্রেন। ম্যাচের প্রায় শেষ দিকে আর্তেম ডভিকের জোরালো হেড ঠেকিয়ে ওয়েলসের জাল অক্ষত রাখেন গোলরক্ষক হেনেসি। তার বীরত্বেই মূলত জিতেছে ওয়েলস, পেয়েছে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের গ্রুপে খেলার টিকিট।