চট্টগ্রাম অগ্নিকান্ডে শোকাবহ পরিবেশ ক্রিকেটাঙ্গনে: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেইনারের ডিপোতে লাগা আগুনে বাড়ছে লাশের সারি। চট্টগ্রামে প্রায় ১৭ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন। ধ্বংসস্তুপ থেকে একের পর এক লাশ বের করে আনছেন উদ্ধারকর্মীরা, গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রামের সিতাকুন্ডে উদ্ধার করা হচ্ছে আরও অনেককে।
এরই মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট একসঙ্গে কাজ করছে সেখানে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনীও। তবু নেভানো যাচ্ছে না আগুন, বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। এমতাবস্থায় দেশের মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেটাররা।
[ চট্টগ্রাম অগ্নিকান্ডে শোকাবহ পরিবেশ ক্রিকেটাঙ্গনে ]
নিজের ফেসবুক পেজে সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা লিখেছেন,
‘চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনারের ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং যারা আহত হয়েছে তাদের প্রতি রইল সমমর্মিতা।’
তিনি আরও যোগ করেন,
‘আমি চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সাধারণ মানুষদের অনুরোধ করি যেন হতাহতদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। শুনেছি প্রচুর রক্তের প্রয়োজন। সবাই এগিয়ে আসুন। আপনার একটু সহযোগিতা, এক ব্যাগ রক্ত হয়তো বাঁচিয়ে দিতে পারে একটি প্রাণ, হাসি ফোটাতে পারে একটি পরিবারকে। সকলে প্রার্থনা করি।’
চট্টগ্রামের সন্তান জাতীয় দলের বর্তমান ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরপরই তিনি লিখেন,
‘চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সকলকে অনুরোধ করবো চট্টগ্রাম মেডিকেলে অবস্থান করার জন্য। সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা অনেক, প্রচুর পরিমাণ রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে।’
তিনি আরও যোগ করেন,
‘দয়া করে যে যেখানে আছেন সাধ্যের মধ্যে থাকলে এক্ষুনি ছুটে যান, আপনার এক ব্যাগ রক্ত হয়তো বাঁচিয়ে দিতে পারে একটি প্রাণ। আপনার পরিচিত রক্তযোদ্ধা বন্ধুদেরও আসার জন্য অনুরোধ করুন। মানুষ মানুষের জন্য।’
আজ দুপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তামিম। সেখানেও আসে এই প্রসঙ্গ। যেখানে তামিম বলেন,
‘যা হয়েছে তা অসম্ভব দুঃখজনক। আমাদের সবার দোয়া যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের সঙ্গে, তাদের পরিবারের সঙ্গে।’
তিনি আরও যোগ করেন,
‘যখনই এরকম কোনো কিছু হয় আমরা দেশ হিসেবে একসঙ্গে এগিয়ে আসি। যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে জায়গায় আছি না কেন ঢাকা, খুলনা…আমাদের সবাইকে নিজ দিক থেকে যতটুক পারি ছোট বড় যা সহযোগিতা করতে পারি এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি তারা সেরা চিকিৎসা সেবা পাবে, তারা সেরা সহযোগিতা পাবে সবার কাছ থেকে। তারা সুস্থ হয়ে উঠবে। আমাদের সকলের দোয়া তাদের সঙ্গে আছে।’
সীতাকুণ্ডের ঘটনায় ক্রিকেটাররা একে একে সবাই শোক জানালেও বিরত ছিলেন সাকিব আল হাসান। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ ব্যবহারকারী অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। বিভিন্ন সময়ে নিজের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে মতামত প্রকাশ করা সাকিব এত বড় ঘটনায় নিশ্চুপ কেন তা নিয়ে প্রশ্ন জেগেছিল সাধারণ ক্রিকেটভক্তদের মাঝে। তবে অবশেষে সাকিব পোস্ট দিয়েছেন সীতাকুণ্ডের ঘটনা নিয়ে।
বিকেলে নিজের ফেসবুকে তিনি লিখেন,
‘চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ এক বিস্ফোরণে নেমে এসেছে মানবিক বিপর্যয়। এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাদের পরিবারের প্রতি থাকল আমার সমবেদনা। ভয়ংকর এ অগ্নিকাণ্ডে আহত সবার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি’।
প্রতিকুল এই সময়ে চট্টগ্রামের পাশেই আছে পুরো বাংলাদেশ। সবাইকে রক্তদানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। যে সকল সাহসী অগ্নিনির্বাপক কর্মী, পুলিশ এবং জরুরি কর্মীরা জীবন দিয়ে লড়ে যাচ্ছেন পরিবেশ অনুকুলে আনার জন্য তাদের সবার প্রতি থাকল আমার শ্রদ্ধা।’
তাছাড়া সুস্থতা কামনা করেন আহতদের। এ লেখায় তিনি আহতদের জন্য প্রয়োজনীয় রক্ত প্রদানে সাধারণের প্রতি আহ্বান জানান। তার লেখায় পুলিশ ও অগ্নিনির্বাপক কর্মীসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত সকলকে শ্রদ্ধা জানান।
রোববার (৫ জুন) ফেসবুকে এক পোস্টে মুশি বলেন,
‘চট্টগ্রামের খবর শুনে খুবই উদ্বিগ্ন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি দোয়া রইল। সীতাকুণ্ড তুমি শক্ত থাকো। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।’
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১-এ, হতাহত শতাধিক। অনেকে দগ্ধ হয়ে ছুটে যাচ্ছেন হাসপাতালে। তাদের জন্য দরকার বিপুল পরিমাণ রক্ত। রক্ত যেন নাগালে পাওয়া যায়, এমন অনুরোধ জানিয়েছেন আরেক ক্রিকেটার লিটন কুমার দাস। ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি বলেন,
‘চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সবাইকে অনুরোধ করব চট্টগ্রাম মেডিকেলে অবস্থান করার জন্য। সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোয় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা অনেক, প্রচুর পরিমাণ রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: