ক্রিকেটের পীচ । ক্রিকেট খেলার ৭ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

ক্রিকেটের পীচ বিষয় বলো হয়েছে ক্রিকেট খেলার ৭ নম্বর আইনে। আমরা আজ  ক্রিকেট খেলার পীচ বা ক্রিকেট খেলার সাত নম্বর আইন নিয়ে আলোচনা করবো।

ক্রিকেটের পীচ । ক্রিকেট খেলার ৭ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

 

ক্রিকেটের পীচ । ক্রিকেট খেলার ৭ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

১। পীচ এর আয়তন

দুটি বোলিং ক্রীজের মধ্যের ক্ষেত্রকে পীচ বলা হয়। আইন নং ৯ দেখুন (বোলিং এবং পপিং ফ্রীজ সকল)। একটি লাইন দুটি উইকেটের মাঝের স্টাম্পের কেন্দ্রবিন্দুর সঙ্গে সংযোগ করলে, তার উভয় দিকে ৫ ফুট বা ১.৫২ মিটার চওড়া হয়।

২।  পীচ নির্বাচন ও প্রস্তুতি

ইনিংসের জন্য টস করার আগে অবধি পীচের নির্বাচন ও প্রস্তুতি সম্বন্ধে মাঠের কর্তৃপক্ষ দায়িত্বশীল থাকবেন। এরপর আম্পায়াররা তার ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ন্ত্রণ করবেন।

৩। পীচ বদল

ম্যাচ চলাকালীন নীচ যতক্ষণ পর্যন্ত না খেলার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে ততক্ষণ পর্যন্ত তা বদল করা যাবে না এবং শুধুমাত্র উভয় অধিনায়কের সম্মতি অনুযায়ীই তা বদল করা যাবে।

 

 

ক্রিকেটের পীচ । ক্রিকেট খেলার ৭ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

৪ । ঘাসহীন পীচ

যখন ঘাসহীন পীচ ব্যবহার হবে, তখন নিম্নলিখিতগুলি প্রযোজ্য হবে।

(অ) দৈর্ঘ্যঃ- পীচের উপরিস্তর অন্ততঃ ৫৮ ফুট (১৭.৬৮ মি)
(আ) গ্রন্থঃ- পীচের উপরিস্তর অন্ততঃ ৬ ফুট (১.৮৩ মি)।

১০ নং আইন এবং টীকা (অ) দেখুন (রোলিং, সুইপিং, মোয়িং, পীচে পানি দেয়া, ফ্রীজে পুনরায় দাগ দেয়া)

জ্ঞতব্য বিষয়

আম্পায়ারদের মনে রাখা উচিত যে পীচের ব্যাপারে তাদের কোন করণীয় সেই যতক্ষণ পর্যন্ত না মাঠের কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠুভাবে তা তৈরি করেছেন ও খেলার চুক্তিমত্ত সময় অনুযায়ী কমপক্ষে ১৫ মিনিট আগেই দুই অধিনায়ক টস করছেন। টসের পর খেলা চলার সময়ে পীচের ব্যবহার ও রক্ষণের দায়িত্ব আম্পায়ারদের ওপর ন্যস্ত হয়ে থাকে।

পীচ নির্বাচন করেন মাঠের কর্তৃপক্ষ আম্পায়াররা নয়। ঘাসের পাঁচ প্রস্থে ১০ ফুট হয়ে থাকে এবং ম্যাটিং এর পাঁচ সাধারণত ৬ ফুট থেকে ৮ ফুট ৮ ইঞ্চি হয়ে থাকে। আমাদের দেশে সচরাচর ম্যাটিং কোন শত্রু মাটি ও মুরামের ওপর পাতা হয়ে থাকে। এইটি পাতার আগে দরকার মতপানি দিয়ে বারবার রোলিং করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

 

ক্রিকেটের পীচ । ক্রিকেট খেলার ৭ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

 

 

ম্যাচ শুরুর আগে মাঠ কর্তৃপক্ষ প্রস্থে ১০ ফুটের মত এক ফালি জমি বেছে নেবেন ও তার উপর পানি ও বারবার রোলিং করে সেটাকে ম্যাটিং পাতার যোগ্যমত তৈরি করবেন। সেটি দৈর্ঘ্যে সঠিক মাপ হওয়া উচিত যাতে উপধারা লঙ্ঘন করা না হয় ।

এই কারণে আম্পায়াররা প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ শুরুর আগের দিন বিকালে মাঠে গিয়ে প্রতিটি বিষয় আইন অনুযায়ী তদারক করবেন। তাতে আম্পায়াররা নিজেরাই লাভবান হবেন। নির্ভুল পীচের দৈর্ঘ্য হবে বোলিং ক্রীজের এক দিকের ব্যাক এজ থেকে অপর দিকের ব্যাক এজ পর্যন্ত ৬৬ফুট বা ২২ গজ দূরত্ব। এই পরিমাপ করার সময় বহু আম্পায়ার ভুল করে থাকেন, তাতে ম্যাচের সঠিক ফলাফলে পরে অসুবিধা দেখা যায়।

বহুদিন ধরে একটা ভুল ধারণা কোন কোন খেলোয়াড়ের মনে রয়ে গেছে যে পাঁচ ও উইকেট বলতে একই বোঝায়। এই ধারণাটি ক্রিকেট জগতে অনেক লোকের মন থেকে চলে যাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। পীচ একটি আয়তক্ষেত্র যার পরিমান হল ১০ ফুট x ৬৬ ফুট। আর তার দুই প্রান্তে তিনটি করে স্টাম্প ও তার ওপরে দুইটি বেল দিয়ে দুটি সেট ৬৬ ফুট দূরত্বে স্থাপিত করাকে উইকেট বলা হয়ে থাকে। আইন নং ৮ উপধারা ১ দেখুন।

 

ক্রিকেটের পীচ । ক্রিকেট খেলার ৭ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

 

ঘাসের পীচের মাপঃ ৬৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট গ্রন্থে।

ম্যাটিং-এর মাপ-ঃ ৬৬ ফুট দৈর্ঘ্যে ও ৬ থেকে ৮-৮ ইঞ্চি প্রস্থে ।

ম্যাটিং পীচ পাতা ও উইকেট পৌতার বিষয় ও নিয়মাবলী নিচে দেখুন।

ম্যাটিং উইকেটের সংক্ষিপ্ত নিয়মাবলী:

(১) যে কোন ম্যাটিং উইকেটের পীচে নিযুক্ত আম্পায়াররা খেলা শুরুর আগের দিন মাঠে গিয়ে তাঁদের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

(২) ম্যাটিং পীচ অন্ততঃ ১০ ফুট চওড়া হবে। কিন্তু ম্যাটিং খুব কম করে ৮৮° প্রস্থ হবে। এবং তা একপ্রান্তের উইকেট থেকে অপর প্রান্তের উইকে পর্যন্ত যেন বিস্তার করা যায়।

(৩) ম্যাটিং পীচের উপর পাতা হবার আগে তা আম্পায়ারদের দ্বারা দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে ঠিক আছে কিনা নিশ্চিত করে নিতে হবে।

(৪) ম্যাটিং, খেলা চলাকালীন যে কোন সময়ে টেনে বিস্তার বা ব্যাটসম্যানের আবেদন সাপেক্ষে ঝাড় দেয়া যাবে বা আম্পায়াররা যদি মনে করেন প্রয়োজনে তা প্রত্যেক বিরতির সময়ে দেয়া যাবে। প্রত্যেকদিন খেলা শেষ হবার পর ম্যাটিং অপসারিত করতে হবে এবং এর পীচ রোল করতে হবে।

এই রোলিং প্রতিদিনের খেলা শেষ হবার পর থেকে তার পরদিন খেলা শুরু হবার পূর্ব অবধি যে কোন সময়ে করা চলতে পারে। কত পরিমাণ পানি এই পীচে দেয়া হবে বা কতক্ষণ রোলিং করতে হবে তা সেই মাঠের অবস্থাদির প্রচলন অনুসারে প্রতিদিন খেলা আরম্ভের আগেই যদদূর সম্ভব এক রকমভাবে করতে হবে। প্রতিদিন ম্যাটিং পাতবার আগে অধিনায়কদ্বয় পাঁচ পরীক্ষা করতে পারেন। যদি কোন কারণবশতঃ এই আইনের ব্যাখ্যা করতে কোন বিচার বিতর্ক দেখা যায় তাহলে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হবে।

 

 

ক্রিকেটের পীচ । ক্রিকেট খেলার ৭ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

 

(৫) সাধারণত আমাদের দেশে উপরোক্ত পরিমাপের সবুজ নারকেল দড়ির ম্যাটিং ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তা আম্পায়ারদের তত্ত্বাবধানে উইকেটের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের উইকেট পর্যন্ত বিস্তার করা ও ভালভাবে টানা হয় এবং তার সাথে সাথে ম্যাটিং- এর দুপাশে“আইলেট” ছিদ্রতে লোহার হুকের দ্বারা যাতে তা আলগা না হয় সেভাবে ঠুকে বসাতে হবে ও খেলার উপযুক্ত যাতে হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

যদি কোন রকমে মনে হয় খেলার সময়ে ম্যাটিং দৈর্ঘ্যে বড় হয়ে গেছে, সেটি দিনের শেষে কেটে ও সেলাই করে যথাযথ মাপে আনতে হবে। এরপর সব ক্রীজগুলিই সাদা রং দিয়ে ম্যাটিং উপর অঙ্কিত করতে হবে ও স্ট্যাম্পগুলি যথাস্থানে পোঁতা হবে ।

(৬) একটি নতুন বলের দ্বারা ৫০ ওভার (৬ বলের) যখন বোলারদের বল করা হয়ে গেছে, তখন ফিল্ডিং দলের অধিনায়ক একটি নতুন বল ব্যবহারের জন্য আম্পায়ারের কাছ থেকে চাইতে পারেন।

আরও দেখুন:

Leave a Comment