ক্রিকেটের স্কোরিং । ক্রিকেট খেলার ১৮ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

ক্রিকেটের স্কোরিং । ক্রিকেট খেলার ১৮ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

 

ক্রিকেটের স্কোরিং । ক্রিকেট খেলার ১৮ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

 

ক্রিকেটের স্কোরিং । ক্রিকেট খেলার ১৮ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

১। একটি রান

রানের দ্বারা স্কোরের হিসাব করা হবে। রান স্কোর করা হয়েছে বলে গণ্য হয়ঃ

(অ) প্রায়শই যখন বল হিট করার পর বা তার খেলার মেয়াদ থাকার মধ্যে যে কোন সময়ে ব্যাটসম্যানদ্বয় পরস্পরকে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে অতিক্রম করেছেন এবং তাদের নিজেদের ক্রীজে পৌঁছেছেন।

(আ) যখন একটি ‘বাউন্ডারি’ স্কোর হয়েছে।

(ই) যখন পেনাল্টি রানগুলি দেয়া হয়

২। শর্ট রানগুলি

(অ) যদি যে কোন ব্যাটসম্যান একটি শর্ট রান নেন তাহলে আম্পায়ার বলটি, “ডেড” হবার সঙ্গে সঙ্গেই ‘একটি শর্ট’ ডাকবেন, সংকেত দেবেন এবং সেই রানটি স্কোরে যুক্ত হবে না। কোন রানকে শর্ট হিসাবে গণ্য হবে যদি একজন ব্যাটসম্যান রানটি নেবার জন্য ঘোরার মুখে পপিং ক্রীজের পিছনের জমিতে তাঁর হাতের ব্যাট বা দেহের কোন অংশ ছোঁয়াতে অসমর্থ হন।

(আ) যদি এই রকম শর্ট রান পরের রানটিকে অসম্পূর্ণ (খাটো) করে তবু ঐ পরের রানটি সম্পূর্ণ করা হলে তা গণ্য হবে।

(ই) যদি ব্যাটসম্যানদের একজন বা উভয়েই ইচ্ছাকৃতভাবে শর্ট রান নেন তাহলে আম্পায়ার তখনই দেখবেন যে ফিল্ডিং দলের কোন ব্যাটসম্যানকে আউট করবার কোন সুযোগই নেই তখন তিনি ‘ডেড বল’ ডাকবেন ও সংকেত দেবেন। আর যে সব রানগুলি নেবার চেষ্টা হচ্ছিল বা আগে সংগৃহীত হয়েছিল তখনই সেইগুলিকে বাতিল করবেন। ব্যাটসম্যানদ্বয় তখন তাঁদের আগেকার পাস্তে ফিরে যাবেন।

(ঈ) রান নেবার সময় যদি উভয় ব্যাটসম্যান কোন একটি রানকে শর্ট করেন তাহলে কেবল একটি রানই বাদ দেয়া হবে।

(উ) কেবল যদি তিন বা তার বেশি রান নেবার চেষ্টা হয়ে থাকে তাহলে একটার বেশিও ‘শট” হতে পারে তবে তা উপরোক্ত (ই) এবং

(ঊ) সাপেক্ষে এবং শর্ট ডাকা সমস্ত রানগুলি বাদ দেয়া হবে। যদি একটির বেশি ‘শর্ট’ রান হয়ে থাকে তখন আম্পায়ারদ্বয় স্কোরারদের কয়টি রান বাতিল হয়েছে তা জানিয়ে দেবেন।

 

ক্রিকেটের স্কোরিং । ক্রিকেট খেলার ১৮ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

 

৩। স্ট্রাইকার ক্যাচ আউট

যদি স্ট্রাইকার ক্যাচ আউট হন তবে কোন রানই গণ্য হবে না।

৪। ব্যাটসম্যান রান আউট

যদি কোন ব্যাটসম্যান রান আউট হন তবে যে রানটি নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেটি স্কোরে যুক্ত হবে না । তবে যদি আহত স্ট্রাইকার কোনভাবে নিজেই রান আউট হন তাহলে কোন রানই স্কোরে অন্তর্ভুক্ত হবে না। আইন নং ২৭ দেখুন ( আহত ব্যাটসম্যান বা রানারের দ্বারা আইন লঙ্ঘন)।

৫। ব্যাটসম্যান অবস্ট্রাকটিং দ্য ফি

যদি কোন ব্যাটসম্যান ” অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউট হন তবে যে সম্পূর্ণ করা রানগুলি বাধা দেবার আগে নেয়া হয়েছে তা স্কোরে যুক্ত হবে। অবশ্য যদি ঐরূপ বাধা একটি ক্যাচ ধরতে যাবার সময় দেয়া হয় তখন সে ক্ষেত্রে কোন রানই স্কোরে অন্তর্ভুক্ত হবে না।

৬। “ পেনাল্টির” জন্য রানগুলি স্কোরে যুক্ত

পেনাল্টির জন্য আইন নং ২০ (লষ্ট বল), ২৪ (নো বল), ২৫ (ওয়াইড বল), ৪১.১ (ফিল্ডিং দা বল) এবং বাউন্ডারির জন্য বরাদ্দ ১৯ নং আইনের (বাউন্ডারি) অধীনে রানগুলি স্কোরে যুক্ত হবে।

৭। ব্যাটসম্যানের প্রত্যাবর্তন

যদি ব্যাটসম্যানদ্বয় বলটি খেলার মেয়াদ থাকাকালীন দৌড়ে পরস্পরকে অতিক্রম করে থাকেন, তাহলে কোন শর্ট রান ডাকা হলেও বা ক্যাচ ধরার ক্ষেত্রে কোন রান স্কোরভুক্ত না হলেও তারা কেউই তাঁদের আগের উইকেটে ফিরে যাবেন না। তবে, ব্যাটসম্যানদ্বয়, বাউন্ডারির বেলায় এবং যদি রান আগ্রাহ্য হয় সে ক্ষেত্রে বা আহত ব্যাটসম্যান নিজেই রান আউট হয়ে থাকেন তাহলে আগে যে যে উইকেটে ছিলেন। সেখানে তাঁরা ফিরে যাবেন। আইন ২৭ দেখুন (আহত ব্যাটসম্যান বা রানারের দ্বারা আইনলন)।

টীকা

শর্ট রান

কোন স্ট্রাইকার যদি তাঁর পপিং ক্রীজের সামনে খেলার জন্য স্টানের’ ভঙ্গী নিয়ে সেই অবস্থা থেকে রান নেন, তবে সেই রানটি পেনাল্টি ছাড়াই নিতে পারেন ।

 

ক্রিকেটের স্কোরিং । ক্রিকেট খেলার ১৮ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

 

জ্ঞাতব্য বিষয়

স্ট্রাইকার ও ননস্ট্রাইকার যতক্ষণ না তারা দৌড়ে যে যার নিজেদের পপিং ক্রীজে পৌঁছাচ্ছেন ও তাদের হাতে ধরা ব্যাট বা দেহের কোন অংশ ক্রীজের পিছনে আছে ততক্ষণ একটি রান সম্পূর্ণ হবে না। এই রান যে শুধু ব্যাট দিয়ে খেলা থেকেই হবে তা নয় । এটি বাই, লেগ বাই, নো বল ও ওয়াইড বল থেকেও হতে পারে।

বলের খেলার মেয়াদ থাকাকালীন, যদি ট্রাইকার বা ননস্ট্রাইকার দৌড়ে রান নেন এবং দুইটি রান নেবার পর তৃতীয় রান নেবার সময় তারা পরস্পর অতিক্রম করেন, এই অবস্থায় যদি ফিল্ডিং দল ননস্ট্রাইকারের দিকের উইকেটের পতন ঘটায়, তবে স্ট্রাইকার ‘রান আউট’ হবেন । এইক্ষেত্রে তাদের দুইটি কৃত রান স্কোরে লিপিবদ্ধ হবে। কিন্তু ফিল্ডিং দলের দ্বারা ক্যাচ আউট হলে, কৃত কোন রান স্কোরে অন্তর্ভুক্ত হবে না।

১৯৮০ (কোড) ২নং ধারায় শর্ট রানের ব্যাপারে বর্ণিত আছে। এগুলি নতুন আম্পায়ারার ভাল করে বোঝার চেষ্টা করবেন। দেখা গেছে, কেউ কেউ এটির ব্যাখ্যাতে গোলমাল করে ফেলেন। এই শর্ট রান নেবার ব্যাপারে আম্পায়াররা মনে রাখবেন, যে ব্যাটসম্যানরা তাদের ক্রীজের বাইরে থেকেও দৌড়ে রান নিতে পারেন। তবে অপর প্রান্তে পৌঁছে তাঁর দেহের কোন অংশ বা হাতে ধরা ব্যাট পপিং ক্রীজের পিছনে (ব্যাক এজ) তাদের রাখতেই হবে। এইটি যদি না পারেন তবে কৃত সেই রানটি শর্ট রান বলে গণ্য হবে । তবে স্ট্রাইকার ও ননস্ট্রাইকার যদি দুজনেই সেই রানটি শর্ট রান করেন তবে একটি রানই শর্ট হবে, দুটি নয়।

অনেক ব্যাটসম্যানের মতে দৌড়াবার সময় তিনি যদি হাতে ধরা ব্যাটটি দিয়ে কেবল পপিং ক্রীজের সাদা দাগের ওপরেই স্পর্শ করেন তাহলেও হবে। এটা কিন্ত সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। এটা শর্ট রান হবে। বহু ক্ষেত্রে দেখা গেছে, যে দুই প্রান্তের আম্পায়াররাই শর্ট রান ডেকেছেন।

কোন একটি রানেতেই এই বিষয় ব্যাটসম্যানদ্বয় যদি দুইটি রান করে থাকে তাহলে একটি রানই সর্ট হবে। যদি দুটি রান শর্ট হয়। তাহলে কৃত তিনটি রানের মধ্যে দুটি রান রান বাদ যাবে। তবে আম্পায়াররা স্কোরারদের জটিল শর্ট রানের সমস্যা উঠলে, তাঁদের যেন ভাল করে বুঝিয়ে দেন।

আরও একটা বিষয় আছে যে স্ট্রাইকার ও ননস্ট্রাইকার তিনটি বা তার বেশি রান করলে, তার ভিতর যদি একটির বেশি রান শর্ট হয় ও চতুর্থ রানের কোন সময় পরস্পর অতিক্রম করার পর যদি কেউ ‘রান আউট’ হন, তবে তারা কে কোন প্রান্তে যাবে সেটি ঠিক বিবেচ্য হয় যেন। আরও জটিল হয় যদি আহত ব্যাটসম্যান পরিবর্ত রানার নিয়ে ব্যাট করেন ।

 

ক্রিকেটের স্কোরিং । ক্রিকেট খেলার ১৮ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন

 

উপরোক্ত বিষয়গুলি আলোচনা করলে বোঝা যায় যে বড় ম্যাচে স্কোরিং এর কাজ সাধারণত স্কোরারদের পক্ষে বেশ শক্ত ও এর জন্য ট্রেনিং নেয়া প্রয়োজন। তার জন্য আইন নং ২,৭,১৯,২০,২৪, ২৫ প্রত্যেক স্কোরারের ভাল করে পড়া উচিত। অনেক সময় দেখা যায় যে বোলার প্রান্তের আম্পায়ার, ফিল্ডসম্যান ক্যাচ ধরার সময় স্ট্রাইকার ‘ও ননস্ট্রাইকার পরস্পর অতিক্রম করেছেন বা করেন নি এ বিষয়ে ভুল করে ফেলেন। এতে স্কোরারদের পক্ষে লিপিবদ্ধ করতে অসুবিধা হয়। তবে এক্ষেত্রে সাধারণতঃ

স্ট্রাইকার প্রান্তের আম্পায়ার অপর আম্পায়ারকে সাহায্য করে থাকেন। তখন কোন ব্যাটসম্যান আবার স্ট্রাইকার হবেন সেটি নির্ভুল হওয়া প্রয়োজন।

যতক্ষণ না বলটি ফিল্ডসম্যান ক্যাচ সম্পূর্ণ করছেন, ততক্ষন ‘ডেড’ হবে না। বলটি ডেড হওয়া বা না হওয়ার ওপর সবটাই নির্ভর করছে স্ট্রাইকার বা ননস্ট্রাইকার কোন ক্রীজে অবস্থান করবেন ও সেই ক্যাচটি সম্পূর্ণ হবার পর। এই বিষয়টির সম্পর্কে বোলিং প্রান্তের আম্পায়ারকে সাহায্য করার জন্য প্রত্যেক স্ট্রাইকার প্রান্তের আম্পায়ারের সজাগ থাকা। উচিত। স্কোরাররা রান লিপিবদ্ধ করার সময় কয়েকটি বিশেষ নিয়ম পালনের জন্য নিচে পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হল।

(১) ১৯৮০ কোড অনুযায়ী ৯টি সংকেত আছে যা প্রত্যেক স্কোরারের জানার প্রয়োজন।

(২) একটি সংগত বা অসংগত ডেলিভারি করা বল স্ট্রাইকার হিট করলে তা তাঁর কৃতিত্বে লিপিবদ্ধ হবে ।

(৩) ‘নো বল’ হিট করা না হলে, বাই, লেগ বাই, ওয়াইড বল সবগুলিই অতিরিক্ততে যাবে।

(৪) বাউন্ডারির বরাদ্ধ হচ্ছে ৪ এবং ৬ রান (ওভার বাউন্ডারি)

(৫) কোন ওভার থ্রো হলে ও সেটি যদি বাউন্ডারিতে যায়, তবে ৪ এবং যতগুলি রান সম্পূর্ণ হয়েছে সেগুলি যুক্ত হবে। তবে ব্যাটসম্যানেরা পরস্পর ক্রস করলে সেই সময়ে সেই রানটি গণ্য হবে।

(৬) সরকারি স্কোরাররা ম্যাচের আগেই মাঠে যদি কোন স্থায়ী বা সাময়িক বাধাকারক বস্তু থাকে সেটার বিষয় আম্পায়ারদের সাথে আলোচনা করবেন।

(৭) একটি ফিল্ডসম্যান যদি কোন ব্যাটসম্যানকে ইচ্ছাকৃতভাবে রান সম্পূর্ণ করতে বাধা দেন সেক্ষেত্রে আম্পায়ার ‘ডেড’ বল ডাকবেন এবং সংকেত দেবেন ও সে রানটি সম্পূর্ণ কৃত রান বলে গণ্য হবে ।

(৮) কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আম্পায়ারদ্বয়ই স্কোরের শুদ্ধতার জন্য দায়ী

(৯) পেনাল্টির দ্বারা সংগৃহীত রান সকল আইন নং ১৯.২৪, ২৫, ৩৪১১-এর অধীন যাবে ।

ভুল সংকেত অনেক সময় ঘটে থাকে, সেগুলি অবশ্য আম্পায়ারদের সব সময়ে ত্রুটি নয়। যেমন একটি এল বি. ডবুলা আবেদনের পর উইকেটরক্ষকের হাতে কাটি বা ষ্টাম্প আউট দুই হতে পারে। এই অবস্থায় আবেদন হলে বোলার প্রান্তের আম্পায়ার তাকে আউটের নির্দেশ দিয়ে থাকেন এবং সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রাইকার প্রান্তের আম্পায়ারও তাঁর সিদ্ধান্ত অনুসারে ব্যাটসম্যানকে ষ্টাম্প আউট দিতে পারেন।

এই ক্ষেত্রে স্কোরার কোন আউট সংকেতটি গ্রহণ করবেন সেটি প্রশ্নের বিষয়। খেলা চলাকালীন অবশ্য কিছুই করার নেই যদি না এটা খুব জরুরি ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তা না হলে উইকেট পতনের সময় সেটি পরামর্শ করে যদি ভুল লিপিবদ্ধ হয়ে থাকে সেটাকে শুদ্ধ করে দেয়া প্রয়োজন।

ভাল স্কোরার যেমন প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে বা টেষ্ট ম্যাচে হতে গেলে এম. সি. সি. আইনের জ্ঞান বা ক্রিকেট খেলার সামগ্রিক অভিজ্ঞতা থাকার দরকার আছে। অভিজ্ঞ স্কোরারদের এম.সি.সি ১৯৮০ কোডের আইন নং ২, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২২, ২৬, ৩২, ৩৮, ৩৯, ৪১, ৪২, প্রভৃতি বার বার পড়া উচিত।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment