ক্রিকেটের হিট উইকেট । ক্রিকেট খেলার ৩৫ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন
Table of Contents
ক্রিকেটের হিট উইকেট । ক্রিকেট খেলার ৩৫ নম্বর আইন । খেলাধুলার আইন
১। আউট-হিট উইকেট
ট্রাইকার হিট উইকেট আউট হবেন যদি বলটি খেলার মেয়াদ থাকাকালীনঃ
(অ) বলের ডেলিভারিটি গ্রহণ প্রস্তুতির কাজ করার ফলে বা গ্রহণ করার সময় অথবা বলটি খেলার পরই বা সেটি খেলতে গিয়ে তাঁর প্রথম রান তৎক্ষণাৎ নেবার জন্য উদ্যত হবার ফলে তাঁর উইকেট দেহের যে কোন অংশ, পোশাক বা সাজ-সরঞ্জামের দ্বারা ভেঙ্গে যায়।

(আ) তিনি তাঁর উইকেটে বল লাগা বন্ধ করতে যাবার জন্য আইনগত দ্বিতীয়বার স্ট্রোক নিতে গিয়ে তাঁর উইকেট ভেঙ্গে ফেলেন। আইন নং ৩৪ ১ আওতায় (হিট দি বল টোয়াইস)
টীকা
নট আউট-হিট উইকেট
একজন ব্যাটসম্যান এই আইনের অধীনে আউট হয় না। যখন উল্লিখিত আইন ১(অ) আওতায় ঐ সকল ক্ষেত্রে তাঁর উইকেট যে কোন উপায়ে ভেঙ্গে দেয়া হয় যদিঃ
(১) বলটি খেলার পরেই প্রথম রান নিতে উদ্যোগ করার সময় বাদে, রান করার সময় বা যখন তিনি রান আউট এড়িয়ে যাচ্ছেন তখন তা ঘটে ।
(২) বোলার তার রান আপ বা বোলিং অ্যাকশন শুরু করার পরেও যদি বলটি ডেলিভারি না করেন সে ক্ষেত্রে আম্পায়ার তৎক্ষণাৎ ডেড বল ডাকবেন ও সংকেত দেবেন।
(৩) যখন তিনি একটি গ্রোয়িং এড়িয়ে যাচ্ছেন, যে কোন সময় তা ঘটে ।
জ্ঞাতব্য বিষয়
কোন স্ট্রাইকার যদি বল ডেলিভারির পর সেটি খেলতে গিয়ে খেলার জন্য প্রস্তুতের সময় বা ১ নং দুটি (অ) ও (আ) উপধারা অনুযায়ী যে কোন উপায়ে তাঁর উইকেট ভেঙ্গে দেন তাহলে তিনি এই আইনের আওতায় আউট হবেন। তবে যদি বলটি বোলারের ডেলিভারির সময় তার হাত থেকে না বেরোয় তখন আম্পায়ার আউট দেবেন না এবং ডেড বল ডাকবেন ও সংকেত দেবেন। আম্পায়ারকে ভাল করে বিচার করতে হবে ও সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যে কখন ব্যাটসম্যান বলটি খেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন, খেলার চেষ্টা করছেন বা বলটি খেলতে গিয়ে এবং খেলার পর তৎক্ষণাৎ প্রথম রান নেবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন।
পর্যায়ক্রমে এই ঘটনাগুলি আম্পায়ারের বিবেচ্য বিষয় এবং তাদের এক রকম সিদ্ধান্তই দেয়া উচিত । এছাড়া স্ট্রাইকার যখন বলের খেলার মেয়াদ থাকাকালীন ঝুঁকে লেটকাট মারতে যান বা কোন বাউনসার পেলে হুক করার চেষ্টা করেন এবং সেই সময়ে যদি তাঁর ব্যাট বা পা স্টোক শেষ হবার পর সঠিক স্থানে টেনে আনতে গিয়ে তাঁর উইকেট ভেঙ্গে যায় তাহলে তা লক্ষ্য করা স্ট্রাইকার প্রান্তের আম্পায়ারের একটি বিশেষ সমস্যা।
তার ওপর স্ট্রাইকারের দেহ বা দেহের সাজসরঞ্জামের দিকে সেই দিকের আম্পায়ারকে নজর রাখতেই হবে যে সেগুলির দ্বারা উইকেট ভেঙ্গে আইন ভঙ্গ হচ্ছে কিনা । এই বিষয়টির জন্য ব্যাটের ফলো থ্র খেলতে গিয়ে যতক্ষণ না শেষ হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আম্পায়ারদের দেখা উচিত।
কিছুদিন আগ পর্যন্ত পৃথিবীর প্রধান ক্রিকেট সংস্থা এম.সি.সি. মেনে নিয়েছিলেন যে বলটি বোলারের হাত থেকে না বেরোলেও খেলার মেয়াদে স্ট্রাইকার যদি ব্যাট লাগিয়ে উইকেট ভেঙ্গে ফেলেন তবে তিনি হিট উইকেট আউট হবেন। তারপর এই নিয়ে বহু আলোচনার পর এম. সি. সি সিদ্ধান্ত দেয় যে বলটি বোলারের হাত থেকে না বেরোলে স্ট্রাইকার ঐ অবস্থায় আউট হবেন না।
স্ট্রাইকার বেশির ভাগ ক্ষেত্র ব্যাকফুট খেলতে গিয়ে দেখা যায় এই আইনে আউট হন । মূলতঃ তাঁর দেহের ভারসাম্যের অভাবেই ব্যাট, দেহ বা দেহের সাজ-সরঞ্জামে লেগে উইকেট ভেঙ্গে যাওয়ার কারণ। কিন্তু স্ট্রাইকার প্রান্তের আম্পায়ারের সেই মুহূর্তে সবদিক দেখে আউট দেয়া খুব সহজ নয়। এছাড়া যদি আম্পায়ার স্ট্রাইকারের সম্পূর্ণ ব্যাটের ফলো থ্র দেখতে অপারগ হন, তাহলে এই আউটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়া আরও কঠিন হয়ে পড়ে।
আবার স্ট্রাইকার যদি আইন সংগতভাবে তাঁর উইকেট রক্ষার জন্য দ্বিতীয়বার স্ট্রোক নেন ও তিনি তাঁর এই কাজে উইকেট ভেঙ্গে ফেলেন তাহলে এই আইনের অধীনে আউট হবেন। এই ক্ষেত্রে আইন ৩৪ ১ (আউট হিট দি বল টোয়াইস)।
কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে স্ট্রাইকার একটি সংগত ডেলিভারি ইচ্ছা করে খেলতে গিয়ে স্ট্রোক নেননি এবং এই সময় তার দেহের যে কোন অংশ, পোশাক বা তার সাজ সরঞ্জামে উইকেট ভেঙ্গে ফেলেছেন তখন আবেদন হলে স্ট্রাইকার আউট হবেন। কিন্তু যদি একটি বল খেলতে গিয়ে স্ট্রাইকার ব্যাট ধরা হাতে জোরে আঘাত লাগে এবং যন্ত্রণায় হাত ঝাড়া দিতে গিয়ে তাঁর হাতের গ্লাভসটি খুলে পড়ে ও তাঁর উইকেট ভেঙ্গে যায় তাহলে স্ট্রাইকার প্রান্তের আম্পায়ার হিট উইকেট আউট দেবেন না।
যদি স্ট্রাইকার একটি বল খেলতে গিয়ে আঘাত পেয়ে উইকেটে পড়ে যান তবে তিনি এই আইনে আবেদন হলে আউট হবেন, যদি না আম্পায়ার মনে করেন যে আঘাতটি অত্যন্ত গুরুতর।
আঘাত গুরুতর মনে করলে তৎক্ষণাৎ তিনি ডেড বল ডাকবেন ও সংকেত দেবেন। অনেক সময় দেখা গেছে যে একটি বল স্ট্রাইকার খেলতে গিয়েছিলেন এবং উইকেটরক্ষকও তাড়াতাড়িতে স্টাম্পের বেল ফেলে দিয়েছেন এবং ঠিক সেই সময় পাইকার তাঁর স্ট্রোকের ফলো থ্রতে শেষদিকে তাঁর ব্যাট দিয়ে স্টাম্পে আঘাত করেন ।
এই ঘটনা হলে স্ট্রাইকার প্রান্তের আম্পায়ারের সঠিক সিদ্ধান্ত দেয়া কঠিন হয়। কারণ বলটিতে আগে কার দ্বারা আঘাত লাগে উইকেটরক্ষক না স্ট্রাইকারের দ্বারা তা বিচার করা বেশ কঠিন। এ বিষয়ে আম্পায়ার তাঁর সতীর্থ বোলার প্রান্তের আম্পায়ারদের সংগে দরকার হলে আলোচনা করেই তাঁর সঠিক সিদ্ধান্ত দেবেন এবং এরকম ঘটনা মাঠে প্রায় ঘটে থাকে ।
আম্পায়ারদের মনে রাখা উচিত, যে কোন বল খেলার পর যখন স্ট্রাইকার তাঁর রান নেবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন ও যখন তাঁর স্ট্রোক নেয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে, সে সব ক্ষেত্রে তিনি এই আইনে আউট হবেন না। যদি স্ট্রাইকার রান আউট বাঁচাবার জন্য তাঁর উইকেট ভেঙ্গে ফেলেন বা দৌড়াবার সময় বা হঠাৎ একটা প্রোয়িং থেকে বাঁচবার জন্য, তিনি আউট হবেন না।
এই আইনটি ক্রিকেট আইনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন এবং এর সঙ্গে সঙ্গে আইন নং ৩৪ ও ৩৯ বিশেষ করে পড়ার প্রয়োজন আছে।
আরও দেখুনঃ