এ বছরের মার্চ মাসের ৪ তারিখ থেকে পর্দা উঠবে ২০২২ নারী ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এখন পর্যন্ত মোট ১১টি নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছরের মার্চ থেকে শুরু হবে এ নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসর। এবারের নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসর অনুষ্ঠিত হবে নিউজিল্যান্ডে। আসন্ন এ নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপে বেশ কিছু এমন নারী ক্রিকেটার রয়েছে যারা তাদের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে নিজ দেশকে এনে দিতে পারেন বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ মঞ্চের সেরা সাফল্য।
Table of Contents
[ আসন্ন নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপে সেরা অলরাউন্ডার [ The best all-rounder in the upcoming Women’s Cricket World Cup ] ]
এলিসি পেরি [ এলিসি আলেকজান্দ্রা পেরি, Ellyse Perry, Ellyse Alexandra Perry ]:
এবারের নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মাঠ মাতাবেন অলরাউন্ডার এলিস পেরি। পেরিকে অস্ট্রেলিয়ার এক অন্যতম কিংবদন্তি নারী ক্রিকেটার হিসেবে ধরা হয়। পেরি শুধু অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ক্রিকেটই নয় বরং ফুটবলেও অস্ট্রেলিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপ এবং ফুটবল বিশ্বকাপ উভয়েই অংশগ্রহণ করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে একজন অলরাউন্ডার হওয়ার পাশাপাশি পেরি অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দলেও একজন অলরাউন্ডার হিসেবে খেলছেন। এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব ফরমেট মিলিয়ে তিনি ৫১.০৪ গড়ে ৫২১১ রান করেন। আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার নারী দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২১৩ রানের ইনিংস আছে তার।
এছাড়াও, আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাট হাতে ১০০০ রানের পাশাপাশি বল হাতে ১০০ উইকেট নেয়া দ্রুততম ক্রিকেটার তিনি। ২০০৭ সালের ২২ জুলাই মাত্র ১৬ বছর ৮ মাস বয়সে পেরি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক করেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার তিনি।
স্টেফানি টেইলর [ স্টেফিনি টেইলর, স্তাফানি টেলর, Stafanie Taylor, Stafanie Roxann Taylor ]:
আসন্ন নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপে উইন্ডিজ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব করবেন স্টেফিনি টেইলর। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্য তাকে নিজ দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় বানিয়েছে। স্টেফিনির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারও বেশ সমৃদ্ধ।
এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৩৭ ম্যাচে ৪৫.৫৪ গড়ে ৫১৪৭ রান করেন। আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১১১ ম্যাচে ৩৫.৮৭ গড়ে ৩১২১ রান করেন। এছাড়াও, তার বোলিং ফিগারও বেশ ঈর্ষণীয়। তিনি ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৪৮ উইকেট এবং টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে মোট ৯৮টি উইকেট নিয়েছেন।
উইন্ডিজ নারী ক্রিকেট দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে ১০০০ রানে মাইলফলক স্পর্শ করা প্রথম নারী ক্রিকেটার তিনি। ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি অভিষেকে ৪৯ বলে ৯০ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংসে দলে তার আগমনী বার্তা দিয়েই দিয়েছিলেন টেইলর।
এরপরে , আর কখনো পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। উইন্ডিজের হয়ে আইসিসি প্রথম নারী বর্ষসেরা ক্রিকেটার তিনি। আসন্ন নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপেও তিনি উইন্ডিজ নারী ক্রিকেট দলের এক তুরুপের তাস হতেই পারেন।
হারমানপ্রিত কর [ হারমানপ্রীত কৌর, Harmanpreet Kaur ]:
ভারতীয় নারী ক্রিকেটারদের মধ্যে এক অন্যতম সুপারস্টার হলেন হারমানপ্রিত কর। ২০০৯ সালের ৭ই মার্চ পাকিস্তানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। একই বছরের ১১ জুন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ২০১২ নারী এশিয়া কাপ ফাইনালে , ভারতের নিয়মিত অধিনায়ক মিথালী রাজ এবং সহ অধিনায়ক ঝুলান গোস্বামি ইনজুরিতে পড়লে তার কাধে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয়।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সে ম্যাচে ৮১ রানে জয়লাভ করে। নিজের ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারের হারমানপ্রিতের অর্জন মোটেও কম নয়। মূলত, নিজের বিগ হিটিং এবিলিটির জন্যই ক্রিকেটাঙ্গনে সবচেয়ে বেশি পরিচিতি তার। এছাড়াও, ২০১৭ ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৭১ রানের একটি অপরাজিত ইনিংস খেলেন হারমানপ্রিত কর।
আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১০৭ ম্যাচে ৩৪.৭০ গড়ে মোট ২৫৬৮ রান করেন। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক টো টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১২০ ম্যাচে ২৬.৫১ গড়ে মোট ২৩০৭ রান করেন তিনি। তবে, আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে নিজেকে তেমন প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি হারমানপ্রিত। টেস্ট ক্রিকেটে ৩ ম্যাচে ৭.৬০ গড়ে ৩৮ রান করেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব ফরমেট মিলিয়ে মোট ৬৫টি উইকেট নিয়েছেন হারমানপ্রিত।
অ্যামিলিয়া কার [ Amelia Kerr, Amelia Charlotte Kerr ]:
নিউজিল্যান্ড নারী ক্রিকেট দলের এক উঠতি তারকা , অ্যামেলিয়া কার। ২০ বছর বয়সী এই তরুণি তার ধারাবাহিক ব্যাটিং এবং বোলিংয়ের মাধ্যমে এক প্রকার চমক দেখাচ্ছেন। সম্প্রতি, ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে সিরিজে ব্যাট হাতে ৫ ম্যাচে ১১৭.৬৬ গড়ে মোট ৩৫৩ রান করেন যেখানে ১ টি সেঞ্চুরি এবং ৩টি হাফ সেঞ্চুরি ছিলো।
এছাড়াও, বল হাতে ৫ ম্যাচে ৭ উইকেট শিকার করেন কার। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ৪৬ ম্যাচে ৩৯.৯৬ গড়ে ১০৩৯ রান করেন। ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটে তার সর্বোচ্চ স্কোর ২৩২ রান করেন। এছাড়া, আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত তিনি ৪২ ম্যাচে ২৩৪ রান করেন। এছাড়াও, এখন পর্যন্ত সব ফরমেট মিলিয়ে ৮৮ ম্যাচে ১০৮ উইকেট নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: