ব্যাডমিন্টনের সঠিক নিয়ম, যা জানে না অনেকেই !
বাংলাদেশে শীতকাল এলেই অলিতে, গলিতে এবং আনাচে কানাচে ব্যাডমিন্টন খেলার পসরা সেজে উঠে। সকল বয়সী মানুষেরাই মেতে উঠেন এ খেলায়।বিশেষ করে রাতের বেলায় কৃত্রিম আলো এবং নেটের ব্যবস্থা করে এটি খেলা হয়।দেশের প্রায় সকল এলাকাতেই ব্যাডমিন্টন প্রেমী মানুষদের এ খেলায় মেতে উঠতে দেখা যায়।এ খেলা বর্তমানে পুরো বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।যার কারণে অলিম্পিকস এবং কমনওয়েলথ এর মতো বড় বড় ক্রীড়া আসরে এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ খেলা বিভিন্ন ভাবে খেলা হলেও এ খেলায় ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি এবং নিয়মাবলির কিছু নির্দিষ্ট মানদন্ড রয়েছে।
Table of Contents
[ ব্যাডমিন্টনের সঠিক নিয়ম, যা জানে না অনেকেই ]
১.র্যাকেটঃ
ব্যাডমিন্টন র্যাকেটের মূল কাঠামোতে থাকে একটি ডিম্বাকৃতি মাথা এবং হ্যান্ডেল যেটির মাথার অংশে এক প্রকার সিনথেটিক সুতো আড়াআড়িভাবে লাগানো থাকে।আন্তর্জাতিক ভাবে র্যাকেটের দৈর্ঘ্য ৬৮ সে.মি. এবং প্রস্থ ২৮ সে.মি. এর বেশি হতে পারবে না। এছাড়া, র্যাকেটের জাল বোনা মাথার দৈর্ঘ্য ২৮ সে.মি. এবং প্রস্থ ২২ সে.মি. এর বেশি হতে পারবে না।
২. শাটলঃ
ব্যাডমিন্টন শাটলের দুটি অংশের মধ্যে উপরের অংশটি পালক দিয়ে তৈরি এবং নিচের বলের মতো গোল অংশটি রাবার দিয়ে তৈরি। ব্যাডমিন্টনের এ শাটলটির অজন ৪.৭৪-৫.০০ গ্রামের মধ্যে হতে হবে যেটিতে পালক সংখ্যা হবে ১৪ থেকে ১৬ টি।
৩.ব্যাডমিন্টন নেটঃ
দৈর্ঘ্যে ২.৫ ফুট এবং প্রস্থে ২০ ফুট সম্বলিত ব্যাডমিন্টন নেটের উপরের মাথাটি মাটি থেকে ৫ ফুট ১ ইঞ্চি উচ্চতায় স্থাপন করতে হবে।
৪.ব্যাডমিন্টনের কোর্টঃ
ব্যাডমিন্টন খেলার কোর্টটি অবশ্যই আয়তাকার আকৃতির হতে হবে। তবে এর মেঝে অবশ্যই পিচ্ছিলতা বিহীন হতে হবে। একক খেলার ক্ষেত্রে এর দৈর্ঘ্য ৪৪ ফুট এবং প্রস্থ ১৭ ফুট হতে হবে। তবে দ্বৈতের ক্ষেত্রে এর দৈর্ঘ্যের কোনো পরিবর্তন না হলেও প্রস্থ অবশ্যই ২০ ফুটের হতে হবে। বেশিরভাগ সময়ের ক্ষেত্রে এর কোর্টের রং সাদা হয় এবং এর দৈর্ঘ্য বরাবর একটি দাগ দিয়ে কোর্টকে দুই ভাগ করা হয়।
৫. ব্যাডমিন্টনের পোস্টঃ
দুই পাশে নেট বাধার জন্য দুটি খুটি বা পোস্ট থাকতে হবে যেগূলো দুটি পার্শ্বরেখার দুই মধ্য বিন্দু বরাবর বসবে এবং এটি প্রান্তরেখার সমান্তরালে ১.৯৮ মিটার দূরে বসবে। এ দূরে টানা রেখাদ্বয়কে শর্ট সার্ভিস লাইন বলে।
আবার উভয় প্রান্ত রেখা থেকে কোর্টের ভেতরে ০.৭৬ মিটার দূরে ২ টি লাইন টানতে হবে। যা প্রান্ত রেখার সমান্তরালে থাকবে এবং এটিকে দ্বৈত খেলার ক্ষেত্রে লং সার্ভিস লাইন বলে। শর্ট সার্ভিস লাইন দ্বারা বিভক্ত দুইদিকে দুইটি কোর্টের মাঝখানে সাইডলাইনের সমান করে দুটি লাইন কাটতে হবে এবং কোর্টের সকল দাগ ৪ সে.মি. চওড়া হবে।
ব্যাডমিন্টন খেলার নিয়মাবলীঃ
একক বা দ্বৈত দুইভাবেই ব্যাডমিন্টন খেলা হয় যেখানে এককে দুইজন এবং দ্বৈতে চারজন খেলোয়াড় থাকে।
ব্যাডমিন্টন খেলায় র্যাকেট দিয়ে শাটলটি আঘাত করার পর যতবার প্রতিপক্ষের কোর্টে গিয়ে পৌছায় ততবারই পয়েন্ট অর্জিত হয়। এটিকে র্যালি বলে। সার্ভিস করার সময় সার্ভারের দুই পা মাটিতে থাকতে হবে। একপক্ষের সার্ভিস ফল্ট হলে অন্যপক্ষ র্যালি লাভ করবে। সার্ভিস করার সময় কর্কটি কোনাকোনি ভাবে কোর্টে না পরলে, সার্ভিস করার সময় যেকোনো পা মাটি থেকে উপরে উঠে গেলে কিংবা কর্ক রং সার্ভিস এরিয়ায় পরলে, সার্ভিস করার সময় কর্ক কোর্টের বাহিরে চলে গেলে মূলত সার্ভিস ফল্ট হয়ে থাকে।
মাঠের নিয়মকানুনঃ
যে দল/খেলোয়াড় টসে জিতবে, সে তার পছন্দ মতো কোর্ট নিয়ে প্রথমে সার্ভিস করার সুযোগ পাবে। প্রতিটি খেলায় সাধারণতো ২১ পয়েন্টের ৩ টি গেমে ১ টি ম্যাচ হয়। প্রতিবার সার্ভ করলে ১ টি পয়েন্ট অর্জিত হয় এবং যে পক্ষ ১ টি গেম জিতবে পরের গেমের শুরুতে সে সার্ভ করবে। ২ জনের পয়েন্ট সমান হলে সেই অবস্থাকে ডিউস বলে। খেলায় যেকোনো ১ পক্ষকে অন্তত ২ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে খেলা শেষ করতে হবে। সর্বোচ্চ ৩০ পয়েন্টের মধ্যে খেলা শেষ করতে হবে। ২০ পয়েন্টের খেলা হলে যে প্রথমে ২ পয়েন্ট লিড নিয়েছিলো সে এবং ২৯ পয়েন্টের খেলা হলে যে ৩০ নং পয়েন্টটি আগে করবে সেই জয় লাভ করবে।
একক খেলায় সার্ভিসকারীর পয়েন্ট ০ বা জোড় হলে কোর্টের ডান দিক থেকে এবং বিজোড় হলে বাম দিক থেকে সার্ভ করতে হবে। সার্ভার একটি র্যালি জিতলে কোর্ট বদল করে সার্ভ করবে এবং রিসিভার র্যালি জিতলে সে তখন সার্ভার হবে। দ্বৈত খেলায় প্রথম সার্ভিসের সময় ডানদিকের খেলোয়াড় কোকুনি বিপক্ষের কোর্টে সার্ভ করবে। খেলার শুরুতে এবং স্কোর জোড় হলে ডানের সার্ভিস কোর্ট থেকে এবং বিজোড় হলে বামের সার্ভিস কোর্ট থেকে সার্ভ করতে হবে।সার্ভিং পক্ষ র্যালি জিতলে সার্ভার সার্ভিস কোর্ট বদল করে পুনরায় সার্ভ করতে পারবে।
সার্ভিং পক্ষ কোনো র্যালিতে হেরে গেলে রিসিভিং পক্ষ একটি পয়েন্ট পাবে এবং তখন রিসিভিং পক্ষ নতুন সার্ভিস করার সুযোগ পাবে।সার্ভিস করার সময় সার্ভিস নেটের গায়ে লেগে নেটে গিয়ে পৌছালেও, সার্ভিসটি সঠিক বলে বিবেচিত হবে। এছাড়াও, লিডিং পয়েন্ট ১১ তে পৌছালেই ৬০ সেকেন্ডের বিরতি নেওয়া হয়।এছাড়া, কোনো কারণে খেলা বিঘ্নিত হলে আম্পায়ার তা লেট বলে ঘোষণা করেন।
জনপ্রিয় খেলা ব্যাডমিন্টনের জন্ম মূলত ভারতের পুনেতে যার কারণে এর অপর নাম পুনাই।মূলত, ভারতের ব্রিটিশ গ্যারিসন নগরী পুনেতে নিযুক্ত সেনা অফিসারগণ এ খেলা আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে এ খেলা ভারত থেকে ইংল্যান্ডে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
ব্যাডমিন্টন বিষয়ে বহু প্রশ্ন রয়েছে সবার, যেমন – ব্যাডমিন্টন কোর্টের মাপ, ব্যাডমিন্টন খেলার কোর্টের মাপ, ব্যাডমিন্টন খেলার নিয়ম, ব্যাডমিন্টন খেলার ইতিহাস, ব্যাডমিন্টন কোর্টের সঠিক মাপ বাংলা, ব্যাডমিন্টন খেলার নেটের উচ্চতা, ব্যাডমিন্টন খেলার টাই লেখার নিয়ম, ব্যাডমিন্টন কোর্টের নেটের উচ্চতা, ইন্টারন্যাশনাল ব্যাডমিন্টন কোর্টের মাপ, ব্যাডমিন্টন কোর্টের মাপ ফুটে ইত্যাদি।
এছাড়া ব্যাডমিন্টন খেলা নিয়ে এমনও প্রশ্ন আছে, যেমন – ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট ফরম, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, ব্যাডমিন্টন রেকেট প্রাইস ইন বাংলাদেশ, ব্যাডমিন্টন খেলার কৌশল, ব্যাডমিন্টন ব্যাটের দাম, ব্যাডমিন্টন খেলার ফরম, ব্যাডমিন্টন লোগো, ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট, ব্যাডমিন্টন জাতীয় খেলা, ব্যাডমিন্টন খেলার উপকারিতা, ব্যাডমিন্টন মাঠ, ব্যাডমিন্টন নেটের উচ্চতা, ব্যাডমিন্টন কোর্টের মাপ বাংলায়, ব্যাডমিন্টন খেলার মাঠ ইত্যাদি। এই আর্টিকেলটি আমরা আগামীতে এক্সটেন্ড করে সেগুলো যুক্ত করে দেবো।
আরও পড়ুন: