আজকের আলোচনার বিষয়ঃ ব্যায়ামের স্থির আসন (পদ্মাসন)
এ ব্যায়ামটি তিনভাবে করা হয়। জ্বর হয়ে বসে মনের ক্ষমতা ও মস্তিষ্কের গভীর চর্চা বা ধ্যান করা হয় এ ব্যায়ামে। এ জন্যে সহজভাবে স্থির আসন এর নাম দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের মুনি-ঋষিরা এভাবে ধ্যানে মগ্ন হতেন বলে জানা যায়। তারা এটিকে পদ্মাসন নামে অভিহিত করেছেন। আমরা স্থির আসন বা পদ্মাসন বলেই জানবো । তিন রকমভাবে অনুশীলন করা যায়, তবে মূলত একটিই ব্যায়াম বললে চলে । এবার আসুন অনুশীলন করি।
ব্যায়ামের স্থির আসন (পদ্মাসন) । ৮ নম্বর ব্যায়ামের নিয়ম । খেলাধুলার আইন
আপনি পা ছাড়িয়ে নিতম্ব মাটিতে রেখে বসে পড়ুন। এবার বাঁ পা হাঁটুতে ভাঁজ করে ডান উরুর উপর এবং ডান পা একইভাবে বাঁ উরুর উপর রাখুন। যেভাবে আমরা ছোটকালে বিছানার উপর আসন পেতে আরামে খেতে বসতাম সে রকম আর কী! এরপর হাত দু’খানা দিয়ে হাঁটু দু’টিকে ধরুন। খামচে নয়, হাল্কাভাবে রাখুন এবং আঙুলগুলো স্বাভাবিকভাবেই বাঁকা হয়ে জড়িয়ে ধরবে আপনার হাঁটুর বাটি।
এবার আপনি জিহ্বার অগ্রভাগ মাড়ির শেষে স্পর্শ করে চোখের দৃষ্টি নাকের ডগায় স্থির। করুন । এভাবে বসে থাকুন যতোক্ষণ সম্ভব। দুশ্চিন্তা কিংবা যে কোনো ধরনের ভাবনা ত্যাগ করুন। স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। ক্লান্তি বোধ করলে পা বদল করুন। আপনার ইচ্ছে মতো সময়ের পর বিলীন আসনে বিশ্রাম নিতে পারেন।
উপকারঃ
এই ব্যায়ামের উপকার অনেক। এতে আপনার প্রায় সব ধরণের রোগ নিরাময় ঘটে। হৃৎপিন্ড ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। হাঁপানী ব্যাধি মুক্ত করে। কিংবা নিয়মিত অভ্যেসকারীর হাঁপানী হতেই পারে না। মস্তিষ্কের সজীবতা বাড়ে। মেরুদণ্ড সোজা ও সতেজ থাকে। চিন্তাশক্তি, ইচ্ছাশক্তি ও স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়। পায়ের পেশী এবং স্নায়ুতন্ত্র সতেজ সক্রিয় থাকে। বাতরোগ হতে পারে না। বাংলাদেশী রোগশাস্ত্র মতে এটি সবচাইতে উত্তম ব্যায়াম-সর্বরোগের ওষুধ।
দ্বিতীয়টিঃ আপনি প্রথমে যে ভাবে বসেছিলেন সেভাবেই বসুন । ডানহাত পেছন দিক দিয়ে ঘুরিয়ে আনুন এবং ডান পায়ের বৃদ্ধ আঙুল ধরুন। একই ভাবে বাঁ হাতে ধরুন বাম পায়ের বুড়ো আঙুল। মনে হবে আপনাকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে, তাই না? ডাবল ক্রোস যেন হাতে ও পায়ে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে বসে থাকুন যতোক্ষণ আপনার ধৈর্য থাকে।
এরকম ভঙ্গিতে আপনার উপকার হবে যে, বুকের খাঁচার গঠনে কোনো ত্রুটি থাকলে তা দূর হবে। মেয়েদের বোলায় বাড়তি লাভ হলো খুবই উপাদেয় তা হচ্ছে বুকের গঠন উন্নত হবে। যদি সারাজীবন তরতাজা পীনোন্নত বুকের অধিকারী হতে চান। তবে এটি নিয়মিত অনুশীলন করুন।
তৃতীয়টিঃ স্থির আসন (১) এর মতোই বসুন। পা দু’খানা অমনভাবে রাখুন। এবার আপনি হাত দু’খানা দু’পায়ের পেছন পাশ দিয়ে মাটিতে রাখুন তালু নির্ভর করে। এখন একটু শূন্যে উঠুন হাতের উপর দেহের ভর চেপে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন। ২৫-৩০ সেকেন্ড এভাবে থাকুন। ৩-৪ বার অনুশীলন করুন। তারপর ক্লান্তি লাগলে বিলীন আসনে বিশ্রাম নিন।
উপকারিতাঃ
স্থির আসনের উপকারই আপনি পাবেন। বাড়তি লাভ হবে এতে আপনার পেটের চর্বি কমাবে ক্ষুধা বাড়াবে এবং হাতের ও কাঁধের পেশী পরিপুষ্ট হবে। ফলে খেলাধুলায় উন্নতি করতে পারবেন।
আরও দেখুনঃ