লন টেনিস
Table of Contents
লন টেনিস [ Lane Tennis ]
ইতিহাস
আধুনিক ক্রীড়া বিশ্বের অত্যন্ত আকর্ষণীয়, অর্থকরী ও জনপ্রিয় খেলা হল টেনিস। যা একদা লন টেনিস নামে পরিচিত ছিল। লন বা গৃহ সংলগ্ন বাগানে এটি খেলা হতো বলে তাই খেলাকে লন টেনিস নামে অভিহিত করা হত। সময় বদলের সাথে সাথে লন টেনিসের গণ্ডি বাবুদের লনের চৌহদ্দি পেরিয়ে এখন পৌঁছেছে খোলা ময়দানে।
এই টেনিস বা লন টেনিসের রয়েছে একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস। তবে এই ইতিহাস কিন্তু সর্বতো কুসুম বিছানো নয়। বরং বলা যেতে পারে এই ফ্লোটির ভাগ্য নামা সময় বিড়ম্বিত হয়েছে অশুভ ইঙ্গিতে। তবে তার অগ্রগতিকে যে দমিয়ে রাখা যায়নি তার প্রমাণ আমরা হাতে-নাতেই পাচ্ছি। আমাদের দেশে এই খেলাটির প্রসার প্রভূত না হলেও জনপ্রিয়তা রয়েছে বহুলাংশে তা অন্ততঃ হলফ করেই বলা যায়। স্টেফি, মনিকা, সাবাতিনি বা পিট, আগামী, বরিস বেকারদের কেনা চেনা?
সে যা হোক। প্রাচীন গ্রীস, ইতালি, মিশর, পারস্য এবং আরব দেশে একটি হ্যান্ডবল ধরনের ক্রীড়ারীতির প্রচলন ছিল। এক ভবঘুরে চারণ কবি সেই খেলাটি ফরাসী রাজ পরিবারের সদস্যদের বিনোদনের উত্তম উপাচার হবে ভেবে তা ইউরোপে প্রচারণ করেন।
তখন একটি ঘরের মাঝ বরাবর দড়ি টাঙিয়ে খেলা হতো। দড়ি নেটের কাজ করত। এটি ছিলো অন্তঃপুরীর ধরন আর বাইরে অর্থাৎ বাগানে বা মাঠে এটি খেলা হতো একটি মাটির ঢিব্বির দু’পাশে প্রথমদিকে পশম ভর্তি একটি ব্যাগ বা খালি হাত ব্যাটের কাজ করত। পরবর্তীতে সম্পূর্ণ কাঠের ব্যাটের মত ব্যাট হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
এই খেলাটি শালীন বা সম্মানজনক নয় বলে চতুর্থ দুই (Louisx) খেলাটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। দীর্ঘদিন বাদে দশম শতকে পুনরায় এর প্রসার ঘটতে থাকে। পরবর্তীকালে অর্থাৎ ১৩ শতকে পুনরায় খেলাটি রাজরোষের শিকার হয়। দশম লুই (Louisx) খেলাটি শুধুমাত্র রাজ-রাজাদের খেলা বলে সাধারণের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। ১৩শ ও ১৪শ শতকে এই খেলাটি ফ্রান্সে Jew de paume (Sports of the hands) বা হাতের খেলা বলে পরিচিত ছিল।
চতুর্দশ শতকে ইংল্যান্ডে খেলাটি বিস্তার লাভ করলে তার অগ্রগতি রুদ্ধ হয়। কারণ এটি খেলে সৈনিকরা সময় নষ্ট করছে বলে রাজা তা নিষিদ্ধ করেন। রাজার মত ছিলো টেনিস না খেলে তীরন্দাজী অনুশীলন করা উচিত।
পরবর্তী ২০০ বছর এটি খুব কমই খেলা হয়েছে। ১৬শ শতাব্দীতে আগ্রহ পুনরায় পরিলক্ষিত হয় ফ্রান্স, ইংল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে। ততোদিন খেলাটির অনুষঙ্গ বা সরঞ্জামে এসেছে আধুনকতার ছোঁয়া। নেট বা জাল ব্যবহৃত হয়েছে। স্নেশুর আকারে স্ট্রিংওয়ালা র্যাকেটের প্রচলনও হয়েছে। টেনিসের এই পুনর্জন্ম তাকে প্রতিযোগিতামূলক খেলায় পরিণত করে। তখন খেলায় জয়ী হলে অর্থ-নেয়া হতো। ১৯শ শতাব্দীতে পুনরায় এর জনপ্রিয়তায় ভাঁটা পড়ে। এই অর্থ পুরস্কারের দরুণ খেলাটি অবস্থাপন্নদের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে।
আধুনিক টেনিসের ইতিহাসের সূচনা হয় ১৮৭৩ অর্থাৎ যখন থেকে মেজর ওয়াল্টার উইংফিল্ড ইংল্যান্ডে এর প্রচার শুরু করেন। তখন এটি ছিল ১৫ পয়েন্টের খেলা। এবং যার কেবল সার্ভারই স্কোর করতে পারত। তখন এটিকে বলা হত স্ফারিষ্টা ইঞ্চি। এটি গ্রিক শব্দ, যার অর্থ বল (Ball) ৭ ফুট উঁচু নেটের দুধারে খেলা হতো।
পরের বছর অর্থাৎ ১৮৭৪ সালে মেরী আউটারব্রিজ খেলাটি প্রচলন করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বারমুড়ায় ছুটি কাটাতে গিয়ে বৃটিশ সৈন্যদের ‘ফারিস্টাইকি’ খেলতে দেখে মেরী আগ্রহী হন। স্বদেশী বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রাথমিক হয়রানি সত্ত্বেও তিনি র্যাকেট নেট ও বল দেশে নিতে পেরেছিলেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম টেনিস কোর্ট স্থাপনের কৃতিত্বের অধিকারীনী। স্ট্রাটেন আইল্যান্ডে ক্রিকেট অ্যান্ড বেসবল ক্লাবের নে ঐ কোর্ট স্থাপিত হয়। অতিদ্রুত খেলাটি ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৮১ সালে খেলাটির একটি নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন প্রবর্তনের জন্য ইউনাইটেড ষ্টেটস লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয়। যা বর্তামনে ইউনাইটেড স্টেটস টেনিস অ্যাসোসিয়েশন বা ইউএসটিএ নামে পরিচিত্তি।
নামকরণ
আসলে টেনিস শব্দটির উৎপত্তি সম্বন্ধে সঠিক কিছু জানা যায় না । ধারণা করা হয় ফরাসী শব্দ টেনেজ (Tenez) যার অর্থ নাত (Takelt) বা খেলো (play) থেকে টেনিস খেলার এর উৎপত্তি।
স্কোরিং প্রথা
আধুনিক স্কোরিং প্রথা সম্বন্ধেও সঠিক কিছু জানা যায় না। তবে ধরে নেয়া হয় ফরাসী শব্দ ‘L’ocuf (যার অর্থ ডিম বা শূন্য) থেকে লাভ (Love) শব্দের উৎপত্তি। তবে স্কোরিং এর ব্যপারে একটা বিষয় ধরে নেয়া হয় তা হল, তদানীন্তন ফ্রান্সে রৌপ মুদ্রার মূল্যমান ছিল ৬০ সু। চার খন্ডের সমাহার ছিল একটি মুদ্রায়। প্রতিটির মূল্যমান ছিল ১৫ সু। অর্থাৎ একটি রৌপ্য মুদ্রা= ৬০ স্যু ( ১৫ সু x ৪) যেমন আমাদের ১০০ পয়সায় ১ টাকা। ঐ ধারণা বা প্রথা থেকেই টেনিসের স্কোরিং শুরু হয়- ১৫, ৩০, ৪৫, ৬০। পরবর্তীতে ঐ প্রথার কিছুটা মোডিফিকেশন হয়। ১৫, ৩০ ঠিক রেখে পরের দুটো কমিয়ে ৪০ ও ৫০ করা হয়।
সাজ-সরঞ্জাম
প্রতিটি খেলার মতই টেনিসের জন্যও প্রয়োজন বিশেষ সাজ-সরঞ্জামের।
খেলার সরঞ্জাম বা ইকুইপমেন্ট যা প্রয়োজন তা হলঃ র্যাকেট, বল ও নেট ।
র্যাকেট:
একটি নির্দিষ্ট বিধিনিষেধের মধ্যে যখন এই খেলা শুরু হয় তখন প্রচলিত ছিল কাঠের র্যাকেট। বহু বছর ধরে কাঠের র্যাকেটে খেলা হয়েছে। ১৯৭০-এ একে একে প্রবর্তিত করা হয় মেটাল র্যাকেটে। যদিও তা স্থায়ীত্ব লাভে ব্যর্থ হয়। কারণ বিজ্ঞানের উত্তোরত্তর উন্নতিও নানান নিরীক্ষার ফলশ্রুতি কম্পোজিট র্যাকেট বাজার দখল করে ফেলে। আধুনিক র্যাকেট টেকনোলজির ফসল হল এই কম্পোজিট বাফেট । ফাইবার গ্লাস, গ্রাফাইট, বোর ও অন্যান্য উপাদানের সংমিশ্রনে এই ব্যাকেট তৈরি করা হয়ে থাকে। অনেক কম্পোজিট র্যাকেটের বিভিন্ন উপাদানের ৫০ ভাগ মাফাইট থাকায় ঐ সব র্যাকেটকে গ্রাফাইট র্যাকেটও বলে।
একটি র্যাকেটের মুলতঃ তিনটি অংশ। হেড, থ্রোট ও গ্রিফ ও হ্যান্ডেল।
হেডঃ
এর উপরিভাগকে বলে টিপ, যেখানে স্ট্রিং থাকে সেই অংশকে বলে ফেস । হেড তিন ধরনের হয়। যথাঃ স্ট্যান্ডার্ড, মিড সাইজ ও ওভার সাইজ। হেডের আকার যত বাড়বে হিটিং এরিয়াও ততো বাড়বে।
থ্রোটঃ
হেড ও গ্রিপের মধ্যবর্তী অংশই হল প্রোট ।
গ্রীপঃ
যে অংশ খেলোয়াড়ের হাতে ধরা থাকে সেই অংশকে বলা হয় গ্রীপ এর নিম্নভাগকে বলা হয় হীল। গ্রীপ সাধারণ ৪১% ” থেকে ৪৩% পর্যন্ত হয়। খোলোয়াড়ের দৈহিক আকার ও বয়সের উপর নির্ভর করে কে কোন গ্রীপ নেবে তা।
র্যাকেটের ওজন:
একটি র্যাকেট সাধারণত ১২ থেকে ১৪ + আউন্স পর্যন্ত হয়।
স্ট্রিং:
র্যাকেট হেডের ফেস অঞ্চল জুড়ে থাকে হিং। এগুলি সাধারণত নাইলনের তৈরি। এছাড়া স্ট্রিং এর থিকনেসেরও রয়েছে ফারাক।
নাইলনের ফাইবারের দাম সবচেয়ে কম আর ন্যাচারাল ফাইবার যা এনিম্যাল গাট বা পশুর নাড়ী থেকে তৈরি তা সবচেয়ে
বলঃ
রাবারকে দুখন্ডে একত্রিত করে তার উপর উলের আবরণে আচ্ছাদিত করে তৈরি হয় টেনিস বল । আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও প্রচলিত টেনিস বলের ওজন ২ ও ২১% । এছাড়া ১০০ উপর থেকে বলটিকে ড্রপ দিলে নুন্যতম ৫৫ লাফাতে হবে।
সাজ বা পরিচ্ছদ
টেনিস খেলার পরিচ্ছদ বরাবরই ছিল সাদা। মুক্ত বাজার অর্থনীতির জামানায় সাদা রং পুরো উষাও না হলেও খেলোয়াড়দের পোশাকে এসেছে অন্যান্য রং এর ছোঁয়া। এবং তা স্বীকৃতও পেয়েছে। তবে একমাত্র উইম্বলডন টুর্ণামেন্টে তার প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে।
পোশাক :
ছেলেদের শর্টস্, টি-শার্ট ও কেডস ও মোজা এবং মেয়েদের স্কার্ট, টব বা ফ্রক এবং কেডস্ ও মোজা; এই কেডস্ অবশ্যই টেনিস ত্যজ; রানিং তাজ নয় ।
কোর্ট :
প্রথম টেনিস ঘাসের কোটেই খেলা হয়। পরবর্তীতে নানান নিরীক্ষার ফলে বিভিন্ন কোর্টের উৎপত্তি হয়। বর্তমানে সারা বিশ্বের ঘাসের কোর্টগুলি নেই বললেই হয়। সেগুলি প্রতিস্থাপিত হয়েছে নানা কৃত্রিম কোর্টে। বিশ্বের একমাত্র ঘাসের কোটটি রয়েছে ইংল্যান্ডের উইম্বলডনে।
অন্যান্য যে সব কোর্টে এখন খেলা হয় সেগুলি হল হার্ডকোর্ট, ক্লে কোর্ট, কৃত্রিম টার্ফ, কার্পেট কোর্ট প্রভৃতি।
কোর্টের আয়তন :
দ্বৈতের জন্য ৩৬ ফুট চওড়া ও ৭৮ ফুট লম্বা। এককের জন্য ২৭ ফুট চওড়া ও ৭৮ ফুট লম্বা। বেস লাইন থেকে সার্চ লাইনের দূরত্ব ১৮ ফুট। সার্ভিস লাইন থেকে নেটের দূরত্ব ২১ ফুট। বেসলাইন থেকে সার্ভিস লাইন পর্যন্ত অংশকে বলা হয় ব্যাককোর্ট এবং সার্ভিস লাইন থেকে নেট পর্যন্ত অংশকে বলা হয় ফোরকোর্ট ।
ক্রীড়া রীতি
সার্ভার এবং রিসিভারঃ নেটের দু’পাশের দু’জন খেলোয়াড় থাকেন। কে আগে বল মারবেন তা নির্ধারিত হয় টস করে। যিনি বল মারেন তিনি হলেন সার্ভার এবং যিনি সেটা ধরেন তাকে বলা হয় রিসিভার। অবশ্য বলা প্রয়োজন প্রতিপক্ষ বলটা শুধু ধরেন না তা তিনি তার র্যাকেট দিয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন। এখানে আরো উল্লেখ্য যে, কে কোর্টের কোন পাশে খেলবেন তা টস করেই নির্ধারণ করা হয়ে থাকে ।
ফন্টস ঃ
একজন খেলোয়াড় একটি সার্ভের জন্য দু’বার সুযোগ পান। যদি দুটোই মিস করেন তাহলে বলা হয় ফন্টস্ এবং প্রতিপক্ষ পয়েন্ট পাবে ।
যে সব কারণে পয়েন্ট নষ্ট হয় :
(১) ডাবল ফন্টস হলে,
(২) বল রিটার্ণ না করতে পারলে:
(৩) রিটার্ণ করা বল কোর্টের মধ্যে না পড়লে
(৪) বল নেটে মারলে;
(৫) রিটার্ণ করার সময় বল একাধিকবার র্যাকেট দিয়ে মারলে
(৬) বল নেট পার হওয়ার পূর্বেই তা ফেরালে,
(৭) র্যাকেট ছুঁড়ে বল মারার চেষ্টা করলে;
স্কোরিং রীতি
সার্ভার রিসিভার
১ ০ = ১৫ – লাভ
২ ০ = ৩০ – লাভ
৩ ০ = ৪০ – লাভ
৪ ০ = গেম
বা
১ ০ = ১৫ – লাভ
১ ০ = ১৫ – ১৫
২ ০ = ৩০ – ১৫
২ ০ = ৩০ – ৩০
২ ০ = ৩০ – ৪০
৩ ০ = ডিউস
৪ ০ = অ্যাডান্টেজ ইন
৩ ০ = অ্যাডভান্টেজ আউট
৫ ০ = গেম (সার্ভার)
৩ ০ = গেম (রিসিভার।
সেট স্কোরিংঃ
৪০ পয়েন্টে একটি গেম। প্রথম ৬টি গেম যে জিতবে সেই হবে সেট বিজয়ী । যেমন ধরা যাক A ও B দুজন খেলোয়াড়। ৬টি গেমের মধ্যে A জিতেছে প্রথম ৬টি গেম এবং B জিতেছে দুটি । তাহলে A সেট জিতেছে ৬-২ সেটে।
যদি দুইজন ৫টি করে জেতে তাহলে হবে ৫-৫। সেক্ষেত্রে খেলা চলতেই থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ তার প্রতিপক্ষ থাকে ২টি গেমে এগিয়ে না থাকবে। দু’গেমে এগিয়ে গেলে খেলার নিষ্পত্তি হবে। অর্থাৎ ৭-৫ বা ৮-৬।
ম্যাচ স্কোরিংঃ
একটি ম্যাচ তিন বা পাঁচ সেটে হয়। সাধারণতঃ মেয়েদের ম্যাচগুলি তিন সেটের এবং ছেলেদের গুলি ৫ সেটের হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু পুরুষদের টুর্ণামেন্টে ৩ সেটে খেলা হয় ।
খেলার ধরণঃ
একক, দ্বৈত, দলগত ও মিশ্র দ্বৈত এই চার ধরনের খেলা হয়ে থাকে।
নিয়ামক সংস্থাঃ
আই টি এফ’ টেনিসের আন্তর্জাতিক নিয়ামক সংস্থা হল “ইন্টারন্যাশনাল টেনিস ফেডারেশন’। এই সংস্থা আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি কর্তৃক স্বীকৃত।
এটিপি :
এ্যাসেসিয়েশন অব টেনিস প্রফেশনালস: এটি বিশ্বের পেশাদার পুরুষ খেলোয়াড়দের সংস্থা। প্রতি বছর সারা বিশ্বে ৮৭টির মত টুর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এই সব টুর্ণামেন্টগুলি এটিপস কর্তৃক স্বীকৃত এবং এটিপির আইন ও নিয়মানুসারে আয়োজিত। প্রতিবছর বিভিন্ন সময়ে পেশাদার পুরুষ খেলোয়াড়দের কম্পিউটার র্যাংকিং দেয় তা এটিপি নিয়ে থাকে।
ডবলিউ টি এঃ
উইমেন্স টেনিস এ্যাসোসিয়েশন পেশাদার মহিলা টেনিস খেলোয়াড়দের সংস্থা। সারা বিশ্বে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত মহিলাদের টুর্ণামেন্টগুলি “ডাবলিউ টি এ’র নিয়ম ও আইনানুসারে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মেয়েদের কম্পিউটার র্যাংকিং ও দেয় ডাবলিউ টি এ।
পেশাদার ও অপেশাদার :
১৯৬৮ সাল পর্যন্ত পেশাদার ও অপেশাদারদের মধ্যে স্ট্যাটাসের ভিন্নতা ছিল। কিন্তু এরপর এই ভিন্নতাকে বিলুপ্ত করে দেয়া হয়। এজন্য সব টুর্নামেন্টে সবার দ্বার উন্মুক্ত হয়। সূচনা হয় উন্মুক্ত যুগ বা ‘ওপেন এরা’র।
টেনিসে কিছু মৌলিক বিষয় :
টেনিস খেলার সময় কিছু মৌলিক বিষয় সম্বন্ধে অবশ্যই অবহিত হওয়া প্রয়োজন। টেনিসে রয়েছে বল মারার কিছু ধরণ। ব্যাকহ্যান্ড, ফোরহ্যান্ড, ভলি, স্ম্যাশ প্রভৃতি ।
এ প্রসঙ্গে একটা কথা অবশ্য বলে নেয়া প্রয়োজন যে, বল অবশ্যই র্যাকেটের ‘ফেস’ অংশ বা স্ট্রিং দিয়ে মারতে হবে। অন্য কোন অংশ দিয়ে বল মারলে তা নিয়ম বহির্ভূত হবে। এবং তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
ব্যাকহ্যান্ড :
প্রতিপক্ষের মারা বল যখন র্যাকেটকে সামনে এনে উল্টোভাবে মারা হয় তখন তাকে ব্যাকহ্যান্ড বলে।
ফোরহ্যান্ডঃ
প্রতিপক্ষের মারা বল যখন র্যাকেটকে পেছন দিক থেকে এনে মারা হয় তখন সেটা হয় ফোরহ্যান্ড ।
ভলিঃ
যখন প্রতিপক্ষের মারা বলকে উঁচু করে তুলে দেয়া হয় তখন সেটা হয় ভলি ।
স্ম্যাশ :
ভলিকে সজোরে ফেরত পাঠানোর রীতি হল স্ম্যাশ। এখানে বলা প্রয়োজন, ক্ষেত্রে উঁচু থেকে আসা বলকে সাধারণ স্ম্যাশ করা হয়।
সার্ভ :
বলকে উঁচুতে ছুঁড়ে তা মাটিতে পড়ার পূর্বেই মারাকে সার্ভ করা।
গ্রীপ :
র্যাকেট ধরার রীতিকে বলা হয় গ্রীপ । এটি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।যেমনঃ কন্টিনেন্টাল গ্রীপ, ইস্টম গ্রীপ, সেমি ওয়েষ্টার্ণ গ্রীপ প্রভৃতি ।
ক্রস কোর্ট শর্টঃ
এক কোর্ট থেকে আড়াআড়িভাবে অন্যকোর্টে মারা শর্টকে ক্রস কোর্ট শর্ট বলে ।
এসঃ
যখন কোন খেলোয়াড়ের করা সার্ভ প্রতিপক্ষ ফেরাতে ব্যর্থ হয় এবং সেই খেলোয়াড় পূর্ণ পয়েন্ট পেয়ে যায় তখন সেই শর্টকে এস শর্ট বলে ।
উপদেশ :
টেনিস খেলা সারা বিশ্বে অন্তত জনপ্রিয় খেলা। এর জন্য প্রয়োজন স্কিলের সাথে স্ট্রাটেজির সুষম সংমিশ্রণ। পাশাপাশি দরকার জেতার তীব্র অভিম্পা, স্থির মস্তিষ্ক ও মনোযোগ। এছাড়া সুষ্ঠু ও পরিকল্পনা মাফিক অনুশীলনের মাধ্যমে একজন ভালো খেলোয়াড় তৈরি হতে পারে ।
আরও দেখুনঃ