আজকে আমরা ভারোত্তোলনের নিয়মাবলী সম্পর্কে আলোচনা করব
ভারোত্তোলন বর্তমান বিশ্বে একটি জনপ্রিয় খেলা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেরও এ খেলার প্রতি ক্রীড়ানুরাগী মহলের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। তবে ভারোত্তোলনের জন্য প্রয়োজন একটি শরীরচর্চা কেন্দ্র। যেখানে ভারোত্তোলনের যাবতীয় সরঞ্জামাদি থাকবে। ভারোত্তোলনের সরঞ্জামাদি যথেষ্ট ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকের পক্ষে তা নিজস্বভাবে ক্রয় করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এই খেলায় শরীরেরও যথেষ্ট উপকার হয়। এটি ব্যায়াম হিসেবেও কাজ দেয়। ভারোত্তোলন খেলার সংক্ষিপ্ত নিয়মাবলী নিচে দেয়া হলঃ
Table of Contents
ভারোত্তোলনের নিয়মাবলী । খেলাধুলার আইন
যিনি ভারোত্তোলন করবেন তিনি তার পোশাক পরে তৈরি হয়ে নেবেন। ভারোত্তোলনের পোশাক হবে কুন্তি বা বক্সিংয়ের মত। একটি একটু উঁচু প্লাটফরম থাকবে যার উচ্চতা হবে ৪ বর্গ মিটার। ভারোত্তোলনকারী এই প্লাটফর্মের উপর এসে দাঁড়াবেন। ভারোত্তোলকের পায়ের কাছে একটি মোটা রড বা শিকে বিভিন্ন ধরনের ওজনের লোহার চাকতি লাগানো থাকে।
ভারোত্তোলক চাকতি লাগানো লোহার রডটি একটানে কাঁধের উপরে তুলবেন। এই সময় তার শরীর বেঁকে যেতে পারে। তিনি হাঁটু ভাংতে পারবেন। এরপর তিনি বারটিকে বা রডটিকে কণ্ঠনালীর কানে এসে বিশ্রাম নিতে পারেন। এই সময় দুই পা একত্রিত অথবা ফাঁকা থাকতে পারে। তবে পা সোজা রাখতে হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে রেফারির সংকেত পেলে ভারোত্তোলক পা বেঁকিয়ে কণ্ঠাস্থি থেকে দু’হাত সোজা করে মাথার উপর বারসহ গোল চাকতিগুলো খাড়াভাবে তুলবেন। এই সময় রেফারি আপ বলে সংকেত দেবেন। রেফারি ডাউন না বলা পর্যন্ত অথবা ইলেকট্রিক সংকেত না দেয়া পর্যন্ত ভারোত্তোলককে এইভাবে থাকতে হবে। বারগুলি ফেলা যাবে না। সংকেত পেলে ফেলা যাবে।
যখন ভুল হবে
(১) জার্ক কাঁধে তোলা
(২) রেফারির সংকেতের আগে শুরু করা হলে।
(৩) কাঁধের উপর তোলার পর হাঁটু বেশি বেঁকে যাওয়া।
(৪) বারের নিচে পিছনের দিকে যদি খুব বেশি বেঁকে যায়।
(৫) গোড়ালি বা পায়ের পাতা তোলা হলে ।
(৬) রেফারির সংকেতের আগে নামালে ।
স্ন্যাচ
ভারোত্তোলকের পায়ের কাছে যে বার বা রড আড়াআড়ি থাকে তাকে তিনি তার দুই হাত দিয়ে ধরে খাড়াভাবে মাথার উপরে তুলবেন। এই সময় পা বেঁকে যেতে পারে। না থেমে বার উপরে তুলতে হবে। শেষ অবস্থায় দুই সেকেন্ড অবস্থান করা যাবে। এই লাইনে তখন পা ফাঁক হলেও তা ৪০ সেন্টিমিটারের বেশি হবে না। স্ন্যাচে একবারেই বার বা ওজন তুলতে হবে।
ক্লিন ও জার্ক
উত্তোলকের পায়ের কাছে যে বার বা রড আড়াআড়িভাবে থাকবে সেই বা ওজনকে ভারোত্তোলক তার দুই হাত দিয়ে প্রথমে কাঁধে তুলবেন। তবে চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছবার আগে যেন বুক না স্পর্শ করে। পরে বুকে রাখা যেতে পারে। তারপরে পদদ্বয় প্রথম অবস্থায় ফিরে আসবে। এবারে পা বেঁকিয়ে দ্রুত প্রসারিত করে বার বা ওজন আবার খাড়াভাবে তুলতে হবে। এক্ষেত্রেও বার ২ সেকেন্ডের মত সময় চূড়ান্ত অবস্থায়। থাকবে। পা সর্বাধিক ৪০ সেন্টিমিটার ফাঁক হবে।
ভুল ভংগি
(১) কাঁধে শেষবার তোলার আগে হাঁটু মাটিতে লেগে গেলে ।
(২) হাঁটুর উপর বার তুললেই লিফট হয়েছে ধরা হবে।
প্রতিযোগিতা
প্রতিযোগিতা চলাকালে প্লাটফর্মে বা মঞ্চে টিম ম্যানেজার, ডুবি বা আপীলের সদস্যরা ছাড়া আর কেউ উঠতে পারবেন না। নাম ডাকার ২ মিনিটের মধ্যে সকলকে প্লাটফর্মে উপস্থিত হতে হবে। হাজির না হলে ২ মিনিট পরে আবার ডাকা হবে। উপস্থিত হতে ৩ মিনিটের বেশি দেরি করলে প্রতিযোগীকে সতর্ক করে দেয়া হবে।
প্রতিবারে পাঁচ কিলোগ্রাম করে ওজন বাড়ানো হবে। আড়াই কেজির অনুরোধ করা হলে বুঝতে হবে এটিই প্রতিযোগীর শেষ তোলা ।
প্রতিযোগিতায় ৭টি গ্রুপ থাকে | |
গ্রুপ ওয়েট | ওজন |
(১) ব্যান্টম ওয়েট | ৫৬ কিলো পর্যন্ত |
(২) ফেদার ওয়েট | ৬০ কিলো পর্যন্ত |
(৩) লাইট ওয়েট | ৬৭১/৪ কিলো পর্যন্ত |
(৪) মিডিল ওয়েট | ৭৬ কিলো পর্যন্ত |
(৫) লাইট হেভি ওয়েট | ৮২১/২, কিলো পর্যন্তচ |
(৬) মিডিল হেভি ওয়েট | ৯০ কিলো পর্যন্ত |
(৭) হেভি ওয়েট | ৯০ এর উপরে |
প্রতিযোগিতার এক ঘন্টা আগে প্রতিযোগীদের ওজন নিতে হবে।
রেফারি
ভারোত্তোলনে ৩ জন রেফারি থাকবেন। তারা লিফট দেখে ২ বা ৩টি সাদা আলো জ্বালালে বুঝতে হবে লিফট ভুল হয়েছে। ওজন তোলার রেকর্ড হলে রেফারি ওজন। রীক্ষা করবেন। তার আগ পর্যন্ত প্রতিযোগীকে প্লাটফর্মে থাকতে হবে।
আরও দেখুনঃ